বাংলায় বিজেপি পেয়েছে মাত্র ১২টি আসন। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ২৯টি আসন। গোটা দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। শরিক ধরে এখন এনডিএ সরকার গড়ে উঠেছে। রবিবার রাতেই হয়েছে শপথগ্রহণ। আর এবার তৃণমূল কংগ্রেসের সাফল্য থাকলেও কাঁটা হয়ে রইল শেখ শাহজাহানের কীর্তি। অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে আগে নিম্নমানের কয়লা কিনতে হতো। এমনকী সেটাও বেশি দামে। তার উপর ছিল একটা কর ব্যবস্থা। যাকে বলা হতো ‘শাহজাহান–কর’। সেটা দিতে হতো ইটভাটার মালিকদের বলে ইডি সূত্রে খবর। এমনকী এই কর–সহ অর্থের চাহিদা বাড়তে থাকায় ইটভাটা বিক্রি করে দিতে হয়েছিল মালিককে বলে ইডির দাবি।
বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূল কংগ্রেস জিতলেও ইডি শাহজাহানের বিরুদ্ধে নয়া চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে নিয়ে আসছে। এই সব তথ্য আদালতে পেশ করা হয়েছে বলেও সূত্রের খবর। সন্দেশখালিতে ইটভাটা মালিকদের অনেকেই ইডি অফিসারদের কাছে এমন অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন বলে খবর। এক ইটভাটা মালিকের কথায়, ‘দাদার হুকুম তামিল করতে কয়লা কিনতে হতো তাঁর থেকেই।’ এখানে জমি সংক্রান্ত নানা অভিযোগ ছিল শাহজাহানের বিরুদ্ধে। কিন্তু কয়লা পাচারের সঙ্গে শাহজাহান জড়িত সেটা কেউ জানতেন না। যা সামনে এনেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আর এখন তা নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসা নেমে আসছে বিজেপির উপর, কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ শুভেন্দু
ইডি সূত্রে খবর, শাহজাহানের ‘হুকুম’ মানতে বাধ্য হতেন সন্দেশখালি ও ন্যাজাটের ২৯টি ইটভাটার মালিকরা। আর তার জেরে কয়লা কিনতেন তৃণমূল কংগ্রেসের বেতাজ বাদশা নেতা শেখ শাহজাহানের কাছ থেকে। ইটভাটার ব্যবসা চালাতে বিপুল পরিমাণ কয়লা লাগে। সেই কয়লা পুরোটাই সন্দেশখালি–সহ বসিরহাটে নিয়ন্ত্রণ করত শাহজাহান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। এক ইটভাটা রমালিক নাকি ‘দিদিকে বলো’ হেল্পলাইনে ফোন করে কয়লার এই কারবার নিয়ে নালিশ করেছিলেন। তাই নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছিল তাঁকে। ইডির হাতে এমন সব তথ্য এসেছে। টন প্রতি শাহজাহানের ‘কর’ ২–৩ হাজার টাকা বেশি দিতে হতো। এভাবেই বিপুল পরিমাণ হিসেব আদালতকে জানিয়েছে ইডি। ধামাখালির দু’টি ইটভাটার মালিক এই খরচ টানতে না পেরে শাহজাহানকে ইটভাটাই বিক্রি করে দেন।
সন্দেশখালি নিয়ে বিজেপি বিপাকে পড়ার পর এখন ইডি নতুন তথ্য সামনে নিয়ে আসছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের অভিযোগ তুলে শোরগোল ফেলেছিল বিজেপি। কিন্তু পর পর স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই সেই আন্দোলন উবে যায়। ঘুরে যায় গোটা পরিস্থিতি। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি রেখা পাত্রকে দাঁড় করিয়ে হেরে যায়। এখন নতুন অভিযোগ সামনে আনছে ইডি। আর তা নিয়ে বিজেপি নেতা বিকাশ সিং বলেন, ‘বারবার আমরা বলে এসেছি, শেখ শাহজাহানের সঙ্গে অনেক দুর্নীতির যোগ আছে। ইডির তদন্তে সেগুলিই উঠে আসছে।’ ২০১৬ সাল থেকে কয়লার কারবারের দিকে চোখ যায় শেখ শাহজাহানের বলে দাবি ইডির।