কয়লা পাচার মামলায় আজ, শনিবার বিচারকের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল সিবিআই। মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালাকে যে পদ্ধতিতে সিবিআই তলব করছে এবার তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। তাই এবার বিচারক ক্ষোভের সঙ্গে প্রশ্ন করেন, লালা অভিযুক্ত নাকি সাক্ষী? সিবিআইয়ের আচরণে আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারকই এই প্রশ্ন তুলেছেন। আর তাতেই চাপে পড়ে গিয়েছে সিবিআই। এই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালাকে সিবিআইয়ের তলবের পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে বিচারকের মন্তব্যের পর। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে আগে দুবার পিছিয়ে যায় চার্জ গঠন। কয়লা পাচার মামলায় আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে আজ শনিবার চার্জ গঠন হওয়ার কথা। সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন আসানসোল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। তাই এদিন সিবিআই আদালতে কয়লা পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালা, জয়দেব মণ্ডল–সহ অন্যান্য অভিযুক্তরা উপস্থিত হয়। কিন্তু আজ চার্জ গঠন হল না। আগামী নভেম্বর মাসের ১৪ তারিখে পুনরায় চার্জ গঠনের শুনানি হবে বলে নির্দেশ দেন আসানসোল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: ‘বদ অভ্যাস আপনার, কিন্তু লক্ষ্মীলাভ পূর্ব রেলের’, স্টেশন চত্বর পরিষ্কার রাখতে নয়া ট্যাগলাইন
অন্যদিকে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। আজ আদালতে করানো হয় অভিযুক্ত ৫০ জনকে। এদিন চার্জ গঠন করার কথা ছিল। যদিও তা হয়নি। এদিন শুনানি শেষে অনুপ মাজি ওরফে লালাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বিচারক। কোন পদ্ধতিতে তাঁকে নিজাম প্যালেসে ডাকা হয় তা জানতে চান বিচারক। জবাবে লালা তাঁর আইনজীবীকে জানান, ইমেল করে ডাকা হয় তাঁকে। তখন বিচারক সেই ইমেল দেখতে চান। লালা তখন তাঁর মোবাইল দেন। সেই মোবাইল থেকে ইমেল দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান বিচারক। আর তখনই সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমারকে বিচারক মেলটি দেখে জানাতে বলেন, ‘এভাবে চার্জশিট পেশের পর কাউকে তলব করা যায়?’
এছাড়া যেহেতু চার্জশিটের পাতার সংখ্যা ২৭ হাজার। তাই অভিযুক্তদের আইনজীবীদের পেপার পড়তে সময় লাগবে। এই কারণে আদালতের কাছে সময় চান আইনজীবীরা। আর ১০টি কোম্পানি এই কয়লা দুর্নীতিতে জড়িত। তার শুনানিও হয় আজ। শুনানি শোনার পর সেপ্টেম্বর মাসের ২১ তারিখে কয়লা কাণ্ডে জড়িত যেসব কোম্পানি তাদের শুনানির দিনও ধার্য করেন বিচারক। আর সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘একজন অভিযুক্তকে সাধারণভাবে ডাকা হচ্ছে কেন? সে জানতেই পারছে না যে সে অভিযুক্ত না স্বাক্ষী। কী কারণে তাকে ডাকা হচ্ছে সেটাও উল্লেখ করা হয়নি।’