দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর আজ, মঙ্গলবার অবশেষে কয়লা পাচার কাণ্ডের চার্জ গঠন হল। আজ চার বছর পর আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে ৪৯ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে। আগে এই নিয়ে সিবিআইয়ের দেওয়া চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসেবে মোট ৫০ জনের নাম ছিল। কিন্তু এই মামলায় অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র পলাতক। তাই আজ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে গঠন করা হল চার্জ। আজ বিকাশ মিশ্র–সহ তিনজনকে আদালতে ভার্চুয়ালি হাজির করানো হয়। যৌন হেনস্থার একটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি বিকাশ মিশ্র। আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে অনুপ মাজি–সহ মোট ৪৯ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়।
এদিকে গত ২৫ নভেম্বর বিনয় মিশ্রের ভাই বিকাশ মিশ্রকে সশরীরে বা ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির করানো যায়নি। তাই তখন চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া আরও একদফা পিছিয়ে যায়। এই মামলায় যে ৪৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হল, তাঁরা প্রত্যেকেই শর্তাধীন জামিনে রয়েছেন। অনুপ মাজি ওরফে লালা, রত্নেশ বর্মা এবং বিকাশ মিশ্র— এই তিনজনের বিচারপ্রক্রিয়া পৃথকভাবে হবে। কারণ, কয়লা পাচার মামলায় যত অভিযোগ উঠেছে সব কটিতেই ওই তিনজনের যোগ আছে। আবার কোলিয়ারির ম্যানেজার, নিরাপত্তারক্ষী, স্থানীয় দোকানদার, ১২ জন ইসিএল আধিকারিক, ২০ জন লালার ব্যক্তিগত সহযোগী এবং ৪ জন কোল মাফিয়ার ক্ষেত্রে পৃথক চার্জ গঠন হবে বলে খবর।
আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় কলসেন্টারের আড়ালে প্রতারণা চক্র, বালিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার ১৯ জন
অন্যদিকে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে চারটি পর্যায়ে ভিন্ন ভিন্ন ধারায় চার্জ গঠন হওয়ার কথা। গত শুনানির দিনে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী জানিয়ে দেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর মামলার চার্জ গঠন হবে। ওই দিন সকল অভিযুক্তকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেন বিচারক। আর বিকাশের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার মামলা কী অবস্থায় রয়েছে সেটা জানার জন্য প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষকে মেল করেন বিচারক। তারপর তাকে আজ ভার্চুয়ালি হাজির করানো গিয়েছে। আদালত সূত্রে খবর, চার্জ গঠনের প্রক্রিয়াকে মোট পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
এছাড়া চার্জশিটে সিবিআই দাবি করেছে, অভিযুক্তেরা আনুমানিক ৩১ লক্ষ মেট্রিক টন কয়লা চুরি এবং পাচার করেছে। তার জেরে সরকারের ১৩৪০ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। ২০১৫–২০২০ সালের মধ্যে এই চুরি এবং পাচারের ঘটনা ঘটেছে। ২০২০ সালে কয়লা পাচার মামলার তদন্ত শুরু করে দেয় সিবিআই। তদন্তে নেমে সিবিআই নানা জায়গা থেকে কয়লা চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে জেনেই জোরদার অভিযান শুরু করে। তখনই একের পর এক অভিযুক্ত ধরা পড়ে যায়। আগামী ২১ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।