রান্নাঘরে কাজ করতে ঢুকেছিলেন গৃহকর্ত্রী। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুনতে পেলেন ফোঁস শব্দ। এই শব্দ শুনে প্রথমে গুরুত্ব দেননি। বরং গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বেরিয়ে যাচ্ছে কিনা দেখে নিলেন। তারপর আবার কয়েক সেকেন্ড পর একই শব্দ। ফোঁস করে শব্দটা সত্যিই কানে এসেছে। তখন পিছন ফিরতেই গৃহকর্ত্রী দেখেন মাটির নীচ থেকে একটি গোখরো সাপ গর্ত করে সেখান থেকে উঁকি মারছে। আর ফোঁস করে শব্দ করছে। এই দেখে তিনি চিৎকার করে রান্নাঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছে ময়নাগুড়িতে? স্থানীয় সূত্রে খবর, গৃহকর্ত্রীর রান্নাঘরের নীচে যে গোখরো সাপ বাসা বেঁধেছে সেটা তিনি জানতেন না। তাই রান্নাঘরে কাজ করার সময় ফোঁস শব্দকে প্রথমে গুরুত্ব দেননি। কিন্তু দ্বিতীয়বার একই শব্দ কানে আসতেই পিছন ফেরেন তিনি। তখনই নজর পড়ে মাটির নীচ থেকে উঁকি মেরে উপরে উঠছে গোখরো সাপ। আর এই ঘটনায় এখন তোলপাড় অবস্থা ময়নাগুড়ির উত্তর মাধবডাঙ্গা এলাকায় স্বপন সাহার বাড়িতে। সেখানে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা এই ঘটনা শুনে। চিৎকার শুনে লোকজন জড়ো হয়ে যায়। তবে গৃহকর্ত্রীকে সাপে কাটতে পারেনি।
আর কী জানা যাচ্ছে? ঘরের ভিতর গোখরো সাপ দেখে তীব্র আতঙ্কে সবাই বাড়ির বেরিয়ে আসেন। আর খবর দেওয়া হয় ময়নাগুড়ি পরিবেশপ্রেমী সংগঠনে। সেখান থেকে সাহেব দাস নামে এক কর্মী অকুস্থলে পৌঁছন। তিনি সাপটিকে রান্নাঘরের গর্ত থেকে উদ্ধার করতেই দেখতে পান গর্তের মধ্যে রয়েছে ১৮টি সাপের ডিম। এই দেখে কপালে ভাঁজ পড়ে যায় সকলের। সাপটিকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয়। সরিয়ে ফেলা হয় ডিমগুলিও। এই সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, উত্তর মাধবডাঙা এলাকায় স্বপন সাহার বাড়িতে একটি গোখরো সাপ মিলেছে। আমরা সাপটিকে উদ্ধার করি। ১৮টি তাজা ও চারটি নষ্ট ডিমও মিলেছে। ডিমগুলিকে বনদফতরের হাতে তুলে দেওয়া হবে এবং সাপটিকে নিরাপদ স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তারপর ঠিক কী ঘটল? স্বপনবাবুর বাড়ির সদস্যদের এখনো ঘোর কাটেনি। তাই ঘুম আসছে না কারও। সোমবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটলেও তখন থেকে এখনও পর্যন্ত দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি বাড়ির সদস্যরা। তন্দ্রা এলেও যেন কানে বেজে উঠছে ফোঁস শব্দ। গ্রীষ্ম এবং বর্ষায় এখানে সাপের উপদ্রব বাড়ে। বাড়ির আনাচকানাচে বিষধর সাপের উপস্থিতি মেলে। এবারও গরম পড়তেই সাপের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।