তবে কি তীরে এসে তরী ডুবেই গেল? মঙ্গলবার রাতে আচমকা ফেসবুকে পোস্ট করেন প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি লিখেছেন অনিবার্য কারণবশত আগামী কালকের কলকাতা-কুচবিহার বিমানযাত্রা বাতিল করা হল…এদিকে সেই পোস্ট দেখে কার্যত মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে অনেকেরই। একেবারে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন আমজনতা। এই বোধহয় কোচবিহার আর কলকাতার মধ্য়ে আকাশপথে যোগাযোগ ফের শুরু হয়। কিন্তু বাস্তবে কি কলকাতা কুচবিহার বিমান চলাচল শুরু হবে না? এই প্রশ্ন একেবারে আছড়ে পড়েছে কোচবিহারে?
এদিকে আগামীকাল থেকে কোচবিহার-কলকাতা বিমানযাত্রার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। আশায় আশায় অপেক্ষা করছেন কোচবিহারবাসী। তার মধ্যেই রাতে আমচকা প্রাক্তন মন্ত্রীর এই বিস্ফোরক পোস্ট। তিনি লিখেছেন, কলকাতা কুচবিহার বিমানযাত্রা বাতিল করা হল। তবে সংবাদমাধ্যমের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি জানিয়েছেন, তিনি ও তৃণমূলের কয়েকজনের বিমান যাত্রা করার কথা ছিল, সেই যাত্রা তাঁরা বাতিল করেছেন।
তবে এটা বোঝা যাচ্ছে তিনি তাঁদের বিমানযাত্রার কথা বোঝাতে চেয়েছেন। সেই বিমানে তাঁদের যাত্রাটা বাতিল হয়েছে। বিমান বাতিল নয়। এমনটাই সূত্রের খবর। তবে প্রাক্তন মন্ত্রীর এই পোস্টকে ঘিরে চরম বিভ্রান্তি ছড়ায়। সূত্রের খবর, ২১ তারিখ নির্দিষ্ট সূচি মেনেই কলকাতা কোচবিহার বিমান ফের চালু হবে। এদিকে দিল্লি থেকে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার এই পরিষেবার সূচনা করার কথা রয়েছে। কলকাতা থেকে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
কোচবিহারের পাঁচজন বিজেপি বিধায়ক থাকবেন। আর থাকবেন না তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। কার্যত বিমান চালুর আগে থেকেই জোর সংঘাত।
পরে আবার মন্ত্রী আগের পোস্ট মুছে দিয়ে লিখেছেন, 'অনিবার্যকারণবশত আগামীকালের কলকাতা-কোচবিহার যাত্রা বাতিল করা হল'
তবে এই বিমান চালুর পেছনে কার কৃতিত্ব রয়েছে তা নিয়েও দড়িটানাটানি চলছে ক্রমাগত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক কিছুদিন আগেই কোচবিহার বিমানবন্দরে গিয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছিলেন। এদিকে রাজ্য় সরকারও এব্যাপারে এগিয়ে এসেছে।
ইতিহাস বলছে ১৯৩৪ সালে প্রথম বিমান নামে কোচবিহারে। রাজ আমলে ১৯৩৭-৩৮ সালে তৈরি হয়েছিল বিমানবন্দর। রাজ আমলে ৪২ আসনের বিমানও চলেছে কোচবিহারে। তবে সেসব স্বর্ণালী অতীত।
কোচবিহার কলকাতা বিমান চালু নিয়ে দীর্ঘদিন নানা টানাপোড়েন চলেছে। বাসিন্দাদের মতে, প্রতিবার ভোট এলেই কোচবিহার বিমানবন্দরের প্রসঙ্গ সামনে আসে। বিমান চালুর ব্যাপারে নানা প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। এমনকী বিমান চালুর ক্ষেত্রে কৃতিত্ব নেওয়ার জন্য় রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে দড়ি টানাটানিও কম হয়নি। এর আগে একাধিকবার পরীক্ষামূলকভাবে বিমান চালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। ফের সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে আবার কোচবিহারে বিমান চালুর উদ্যোগ। তবে এর ধারাবাহিকতা কতদিন বজায় থাকবে সেদিকেই তাকিয়ে আমজনতা।