বিধানসভা নির্বাচনের কয়েকমাস আগে তৃণমূল থেকে নেতাকর্মী, বিধায়কদের গেরুয়া শিবিরে যাওয়ার যে হাওয়া উঠেছে তা এবার একবাক্যে স্বীকার করে নিলেন দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ। একইসঙ্গে রবিবার বড়শাকদল এলাকায় এক কর্মিসভায় তিনি সরাসরি জানালেন যে তাঁর কাছেও বিজেপি–তে যাওয়ার অনেক অফার এসেছে। আর বর্তমানে রাজ্যে যে দলবদলের হিড়িক তৈরি হয়েছে তার জন্য একমাত্র দায়ী তৃণমূলের লোকজনই। এমনই মত উদয়ন গুহর।
কিন্তু দিনহাটার বিধায়ক কি দলবদল করে বিজেপি–তে যাবেন? এ ব্যাপারে এদিন প্রকাশ্য সভায় উদয়ন গুহ বললেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি বিজেপি–তে যান, একমাত্র তবেই আমি বিজেপি–তে যাব।’ তাঁর কথায়, ‘বিজেপি থেকেও অনেক প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু আমি যাব না। কারণ আমি তৃণমূলের আদর্শ নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে তৃণমূল করতে এসেছি। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি কখনও বিজেপি–তে যান, তবেই আমি বিজেপি–তে যাব। যতদিন তিনি তৃণমূলে আছেন, ততদিন আমি বিজেপি–তে যাব না।’
তবে হঠাৎ দিনহাটার বিধায়কের মুখে দলবদলের কথা কেন? তিনিই এদিন বলেন, ‘গত ১০ দিন কলকাতায় ছিলাম আর এখানে রটে গিয়েছে যে উদয়ন গুহ বিজেপি–তে যেতে পারে। লোকজন বলতে শুরু করেছে, এটাও হতে পারে যে উদয়ন গুহ টিকিট পাবে না, তাঁকে কোচবিহার দক্ষিণে দিতে পারে। তাই ধরাধরি করতে গিয়েছে, টাকাপয়সা দিতে গিয়েছে, যাতে দিনহাটায় টিকিট পেতে পারে। পুরসভার প্রশাসক পদ চলে যাবে ভেবে দলীয় নেতৃত্বকে টাকাপয়সা দিতে কলকাতায় গিয়েছে।’
তবে এ সব বলে হাওয়া গরম করে কোনও লাভ নেই বলেই এদিন জানিয়েছেন দিনহাটার বিধায়ক। তিনি এদিন পরিষ্কার জানান, ‘এ রটনা বিজেপি রটায়নি। যা বলার সব তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই বলেছে।’ এদিকে, এদিনের সভায় দিনহাটার কমিটির ১৫ জনের মধ্যে ৫ জন উপস্থিত ছিলেন না। তাঁদের উদ্দেশে উদয়নের তোপ, ‘এদিনের মিটিংয়ে কারা আসেননি, সেদিকে নজর রাখা হোক। তলে তলে গর্ত খোঁড়ার চেষ্টা করবেন, উদয়ন গুহর আগে পিঠের চামড়া আপনার যাবে।’
কোচবিহারের বহু তৃণমূল নেতাকর্মী ইতিমধ্যে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। তাঁদের উদ্দেশে উদয়ন গুহর বার্তা, ‘দল ছেড়ে যে–ই যাক না কেন, যেখানেই যাক না কেন, কোচবিহারে কেউ তৃণমূলের ক্ষতি করতে পারবে না। কিন্তু দলের মধ্যে যাঁরা রয়েছেন তাঁরাই হয়তো দলের ক্ষতি করবে।’ এদিনের সভামঞ্চে উদয়নের হুঙ্কার, ‘কারও বাঁ হাতে ভোট আমার লাগবে না। খাওয়ার সময় ডান হাতে আর ভোট দেওয়ার সময় বাঁ হাতে? দল যদি আমাকে প্রার্থী করে তবে আমি ডান হাতের ভোটেই জয়ী হওয়ার চেষ্টা করব। বাঁ হাতের ভোট আমার প্রয়োজন নেই।’