এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। যে ঘটনাকে ঘিরে তুমুল আলোড়ন পড়েছে কোচবিহারে। এই বধূকে একদিন আগে দেখা গেলেও পরের দিন মৃত অবস্থায় দেহ মিলল। আজ, সোমবার ওই বধূর ঘর থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ আসতে থাকে। কিন্তু ওই শিশুকে থামানোর কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছিল না। এই দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। তখন তাঁরা ওই বাড়ির বাড়িওয়ালাকে খবর দেন। বাড়িওয়ালা নীচে নেমে এসে দরজায় ধাক্কা দিতেই তা খুলে যায়। তখন পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দরজা ভিতরে ঢুকতেই শিউরে ওঠেন সকলে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই মৃত গৃহবধূর নাম অর্পিতা সিং (৩৮)। তাঁর বাড়ি কালজানি কুড়ারপাড় এলাকায়। কিন্তু ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহার চকচকায়। এখানে সে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে খবর, ওই মহিলা বাড়ি থেকে বিশেষ না বেরলেও সকলের সঙ্গে পরিচয় ছিল। খুব কম কথা বলতেন। বাড়ির কাজ ও শিশুকে নিয়ে সময় কাটত তাঁর। সেখানে এমন ঘটনা দেখে সকলেই অবাক। তাই খবর দেওয়া হলে ঘটনাস্থলে যায় পুন্ডিবাড়ি থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। শুরু হয়েছে রহস্যমৃত্যুর তদন্ত।
আরও পড়ুন: মুম্বই পুলিশ ধরতে পারল না খুকুমণিকে, অভিনেতা সইফ আলির উপর হামলায় বাংলা যোগ মিলল না
স্থানীয় সূত্রে খবর, আজ সকালে দীর্ঘ সময় ধরে ভাড়াটিয়া অর্পিতা সিংয়ের ঘর থেকে তাঁর দেড় বছরের শিশুর কান্না শুনতে ভেসে আসছিল। সেটা সকলেই শুনতে পাচ্ছিলেন। কিন্তু কেউ ওই শিশুকে থামাতে উদ্যোগ নিচ্ছিল না। শিশুর কান্না শুনতে পান বাড়ির মালিকও। অথচ আর কারও কোনও সাড়াশব্দ শুনতে পাওয়া যায়নি। তাই সন্দেহ হওয়ায় ভাড়াটিয়ার ঘরে যান ওই বাড়ির মালিক। আর ধাক্কা দিতেই ঘরের দরজা খুলে যায়। অর্থাৎ দরজা আগে থেকেই খোলা ছিল। ভিতরে ঢুকতে তিনি দেখেন, শিশুটি বিছানায় শুয়ে নাগাড়ে কেঁদে চলেছে। আর রান্না ঘরে পরে রয়েছে তার মায়ের নিথর দেহ। তখন গৃহবধূ অর্পিতার স্বামী ঘরে ছিলেন না।
তাহলে কি স্বামীই খুন করেছে স্ত্রীকে? এই সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। বাড়ির মালিক পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে। কেমন করে এবং বা কোন উদ্দেশে ওই বধূর মৃত্যু হয়েছে সেটা কেউই বুঝে উঠতে পারছে না। বাড়ির মালিক হীরামন চন্দ্র দাস বলেন, ‘অর্পিতা সিং এবং তাঁর স্বামী রবীন্দ্র আঢ্য দীর্ঘ ৮ মাস আগে আমার চকচকার বাড়িতে ভাড়া এসেছিলেন। ওই বধূর স্বামী চকচকার রাইস মিল কাজ করেন। বাড়ি কালজানি কুড়ারপাড় এলাকায়। আজ, সোমবার অর্পিতার সন্তান অনেকক্ষণ ধরে কাঁদছিল। সেটা শুনে আমি তাদের ঘরে যেতেই এমন পরিস্থিতি দেখতে পাই। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়।’