জনকল্যাণমূলক এবং দক্ষতার সঙ্গে প্রশাসনিক কাজের জন্য একাধিকবার প্রশংসা পেয়েছেন কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। আর এবার পশুপ্রেমের জন্য প্রশংসা পেলেন এসপি। একটি চিড়িয়াখানা থেকে বাংলার জাতীয় পশু মেছো বিড়ালকে দত্তক নিলেন পুলিশ সুপার। সোমবার তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের রসিকবিল মিনি জু থেকে ওই মেছো বিড়ালটিকে সস্ত্রীক ভরণপোষণের দায়িত্ব নিলেন তিনি। এদিন বনদফতরের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই মেছো বিড়ালের দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হয় পুলিশ সুপারের কাছে।
আরও পড়ুন: মহাকুমা শাসকের নামে ১২টি ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, সতর্ক করলেন আধিকারিক
চিড়িয়াখানার নিয়ম অনুযায়ী, এক বছরের জন্য সস্ত্রীক মেছো বিড়ালটির ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন পুলিশ সুপার। তার চুক্তিপত্র দ্যুতিমান ভট্টাচার্য এবং তাঁর স্ত্রীর হাতে তুলে দেন কোচবিহার বিভাগের ডিএফও এঞ্জেল পি ভুটিয়া। এর জন্য বছরে ৩০ হাজার করে টাকা দিতে হবে পুলিশ সুপারকে। পুলিশ সুপার জানান, সরকারি নিয়ম মেনে তিনি বন্যপ্রাণীর দত্তক নিয়েছেন। এর জন্য বার্ষিক ৩০ হাজার টাকা করে দিতে হবে। একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, বন্যপ্রাণীদের জন্য এভাবে মানুষ এগিয়ে আসলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা আরও বাড়বে।
প্রসঙ্গত, রসিকবিল মিনি জু’তে এই প্রথম কেউ মেছো বিড়াল দত্তক নিল। বন বিভাগের এডিএফও বিজন কুমার নাথ জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য চিড়িয়াখানা নিয়ম মেনে পুলিশ সুপার সস্ত্রীক মেছো বিড়াল দত্তক নিয়েছেন। এর পাশাপাশি যদি কেউ চায় তাহলে অন্যান্য পশুগুলিকেও বার্ষিক অথবা মাসিক খরচে বন্যপ্রাণী দত্তক নিতে পারবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, দ্যুতিমান সরকার একজন কড়া পুলিশ সুপার হলেও তিনি একজন পশুপ্রেমী। এর আগেও বন্যপ্রাণীর স্বার্থে তিনি এগিয়ে এসেছিলেন। তিনি হাওড়ায় যখন ডিসিপি পদে কর্মরত ছিলেন সেই সময় একটি স্ট্রাইপড হায়না দত্তক নিয়েছিলেন। সেটি আলিপুর চিড়িয়াখানায়। এরপর পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার থাকাকালীন রমনা বাগান মিনি জু-তে সবুজ ইগুয়ানা দত্তক নিয়েছিলেন। পুলিশ সুপারের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সেখানকার নাগরিক থেকে শুরু করে পশুপ্রেমীরা। প্রসঙ্গত, চিড়িয়াখানা থেকে দত্তক নেওয়া পশুদের বাড়ি নিয়ে যাওয়া যায় না। তবে পশুর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ সুবিধা থাকে। রসিকবিলে শুধু মেছো বিড়ালই নয়, ঘড়িয়াল, হরিণ, ময়ূর, পাইথন, চিতাবাঘও এভাবে দত্তক দেওয়া হয়।