প্রচলিত দুর্গামুর্তির সঙ্গে অনেকটাই ফারাক।রাজ আমল থেকেই পূজিতা হয়ে আসছেন কোচবিহারের বড়দেবী।দেবীবাড়ি মন্দিরে তৈরি করা হয় বড়দেবীর মূর্তি।ময়নাকাঠ দিয়ে তৈরি হয় দেবীর কাঠামো। সেই রাজ আমলের রীতি যেন আজও জীবন্ত বড়দেবীর পুজোর সঙ্গে।
দেবী এখানে রক্তবর্ণা। দেবী দুর্গার মূর্তির সঙ্গে আমরা লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশকে দেখতেই অভ্যস্ত। কিন্তু কোচবিহারে বড়দেবীর সঙ্গে থাকেন জয়া ও বিজয়া। এখানে বাঘ ও সিংহ মহিষাসুরের উপর ঝাপিয়ে পড়ার দৃশ্য দেখা যায়। মহিষাসুরের সারা শরীর বিশেষ বর্ণে চিত্রিত করা থাকে।মহারাজার স্বপ্নে দেখা বড়দেবী শুধু কোচবিহারবাসীর নয়, গোটা উত্তরপূর্বের মানুষের কাছে আরাধ্যা দেবী।
কথিত আছে ৫০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন এই পুজা। জনশ্রুতি আছে মহারাজা বিশ্বসিংহ অসমের চিনকা পাহাড়ে থাকতেন।সেখানেই কার্যত খেলার ছলে ময়নাগাছের ডালকেই দেবী হিসাবে পুজো করতেন তিনি। আর এখনও বড়দেবীর কাঠামোতে ময়না কাঠ ব্যবহার করা হয়।রীতিমতো পুজো করে সেই কাঠকে দেবীর কাঠামোর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।
এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে রাজরীতি। আজও রাজপুরোহিত এই পুজো করেন। দেবত্র ট্রাস্টের উদ্যোগে এই পুজো হয়।অষ্টমীর দিন সকালে দুয়ারবক্সি অঞ্জলি দেন।মহারাজা না থাকায় দুয়ারবক্সি অঞ্জলি দেন।সেই দুয়ারবক্সির পদ আজও আছে। বর্তমানে জেলাশাসকও অষ্টমীতে পুষ্পাঞ্জলি দেন। এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে কোচবিহারের আবেগ। ভক্তদের বিশ্বাস দেবীকে ভক্তিভরে ডাকলে তিনি ভক্তদের মনের বাসনা পূরণ করেন।