পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিগত কয়েকমাস ধরে বিভিন্ন সমবায় নির্বাচনে তৃণমূলকে ঠেকাতে হাত ধরেছে বিজেপি ও সিপিএম-এর নীচু তলার কর্মীরা। এই নিয়ে শীর্ষ বাম নেতৃত্বের তরফে বারংবার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। তবে তাতে ফল হয়নি। শাসকদলকে ঠেকাতে সব হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন বাম কর্মীরা। সম্প্রতি রাম-বাম জোট তৃণমূলকে হারিয়েছে তমলুকের সমবায় নির্বাচনে। আর এরপরই ফের চর্চায় উঠে এসেছে বামেদের নীচু তলার কর্মীদের 'আদর্শ'। জানা গিয়েছে, তমলুকের হিজলবেড়্যা চাতরাদাঁড়ি কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটে উড়ে গেল তৃণমূল। এখানে মোট ১২টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে ১১টি আসনেই জয়ী হয়েছেন বামপন্থী প্যানেল ও বিজেপি প্যানেলের প্রগতিশীল জোটের প্রার্থীরা। বাকি একটি মাত্র আসনে জয়ের মুখ দেখেছে তৃণমূলপন্থী প্যানেল। (আরও পড়ুন: বন্দে ভারতের দৌলতে ভারতের মুকুটে নয়া পালক, বিশ্বে এই প্রথম চালু 'হাইরাইজ' ট্রেন)
হিজলবেড়্যা চাতরাদাঁড়ি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটে ১২টি আসনের মধ্যে ১২টিতেই প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূলের প্যানেল। অন্যদিকে বাম ও বিজেপির প্যানেল মিলে প্রগতিশীল জোট তৈরি করে ১২ টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। মোট ২৬ জন প্রার্থী নির্বাচনে লড়াই করেন। প্রসঙ্গত, সমবায় নির্বাচনে কোনও রাজনৈতিক দল সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে না। তবে রাজনৈতিক দলের নীচু তলার কর্মীরা এই নির্বাচনে সক্রিয় থাকে। তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই সমবায় নির্বাচনগুলি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে রাজ্য রাজনীতিতে এই ধরনের রাম-বাম জোট নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই। এদিকে মমতাও রাম-বামের 'আঁতাত' নিয়ে সরব হয়েছেন বারংবার। এরই মধ্যে সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের জয়ের পর বিরোধীদের 'অসাধু জোট'কে তোপ দেগেছিল ঘাসফুল শিবির। তবে সমবায় ভোটে রাম-বাম জোটের কারণেত হারকে পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল। শাসকদলের দাবি, সমবায় ভোটের প্রভাব পঞ্চায়েত নির্বাচনের ওপর পড়বে না। এমনকী সমবায় ভোটে রাম-বাম জোটকে হাতিয়ার করে প্রচার করার ছক কষছে জোড়াফুল শিবির। এদিকে নীচু তলায় গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে জোটে অস্বস্তিতে পড়েছে বামেদের শীর্ষ নেতৃত্ব।
এর আগে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। এই আবহে তমলুকের সমবায় ভোটে রাম-বাম জোটের জয় নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের সিপিএম জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, 'শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য নীচু তলায় পৌঁছাচ্ছে। রাজ্য স্তরের নেতারা জেলায় জেলায় এসে বিভিন্ন স্তরে বৈঠক করে বামপন্থী মানুষদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তার মধ্যে দুই একজন অবুঝ থাকতে পারেন। কিন্তু আমাদের দলের সঙ্গে যুক্ত ৯৫ শতাংশ মানুষ উঁচু তলার বার্তাকে মান্যতা দিয়ে কাজ করছে।'