খুব দ্রুত দাবি পূরণ হতে চলেছে উত্তরবঙ্গের মানুষের। সমগ্র পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সের এই দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। আর এই দাবি পূরণ হলে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নয়া দিক খুলে যাবে বলে মনে করেন অনেকে। বহুদিন ধরে দাবি তোলা হলেও কেন্দ্রীয় সরকার তা ফেলে রেখে দিয়েছিল। এবার সেই টানাপোড়েনের সমাপ্তি ঘটল। এবার এক হাজার কোটিরও বেশি অঙ্কের টাকার প্রকল্প বরাদ্দ করল কেন্দ্রীয় সরকার। আর সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জোয়ার আসবে পর্যটন শিল্পে এবং সীমান্তের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায়। এবার সেবক করোনেশন সেতুর বিকল্প একটি সেতু নির্মাণ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। যা এখন বড় খবর।
এদিকে সেবকের তিস্তা নদীর উপর থাকা ঐতিহাসিক ব্রিটিশ আমলের করোনেশন সেতুর হাল বেহাল হয়ে পড়েছিল। ১৯৪১ সালে চালু হওয়া এই সেতুর ‘বয়স’ হয়েছে। সেইসঙ্গে আবার দেড় দশক আগে ভূমিকম্পের জেরে করোনেশন সেতু যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরেই তিস্তার উপরে বিকল্প করোনেশন সেতু নির্মাণ করার দাবি উঠছে। দ্বিতীয় করোনেশন সেতু নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিটেল প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করার কাজও শুরু করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এবার পাল্টা খেলে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। বিকল্প অত্যাধুনিক আর একটি সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে এবার ১১৯০.৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক।
আরও পড়ুন: এগরা থেকে দুই বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেফতার, দাম্পত্য বিবাদ থেকে বেরিয়ে এল নয়া মোড়
অন্যদিকে এই বিকল্প সেতুর পাশাপাশি সেতুর সঙ্গে সেবক, দার্জিলিং এবং এলেনবাড়ি যোগাযোগের প্রায় সাত কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোডের কাজও এখানে হবে। এই প্রকল্পের কাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রী নীতীন গড়কড়িকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। এই সেতুটি ১০ নম্বর এবং ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ককে যুক্ত করবে। আর তার জেরে উত্তর–পূর্বাঞ্চল এবং ডুয়ার্সের সঙ্গে দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে যোগাযোগের গতি বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া দীর্ঘদিন ধরেই তিস্তার উপরে বিকল্প করোনেশন সেতু নির্মাণের দাবি উঠছে। তা নিয়ে রাজ্য সরকার পদক্ষেপও করেছে। কিন্তু নানা জটের কারণে সেই প্রকল্পের কাজ থমকে থেকেছে। এবার কেন্দ্রীয় সরকারের পালা। কেন্দ্রীয় সরকার গত দু’বছর ধরে বিকল্প সড়ক সেতুর ডিপিআর তৈরির কাজ চলছিল। এবার খরচ চূড়ান্ত হয়। এই বিষয়ে দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, ‘২০১৯ সালে সাংসদ হওয়ার পরই বিকল্প সেতুর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী সংসদে জানিয়েছেন, এই সেতু তৈরির পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে। ৩৬ মাসের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করা হবে। সেতুটি নির্মাণ হলে ডুয়ার্স–শিলিগুড়ির মধ্যে দূরত্ব ১৪ কিমি কমে যাবে।’