করোনাভাইরাসে ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন ৩৬১ জন। সংক্রামিত ১৭,০০০ হাজার মানুষ। চিনের উহান শহর থেকে শুরু হওয়া এই ভাইরাস সারা বিশ্বের ২৬ দেশে ছড়িয়ে গিয়েছে। ভারতেও কেরালায় দুজন অসুস্থ করোনাভাইরাসে। এবার সেই ভাইরাসের আতঙ্কে চিন থেকে মাল কেনা বন্ধ করলেন শিলিগুড়ির ব্যবসায়ীরা।
শিলিগুড়ির বণিক সংস্থার সচিব গোরীশংকর গোয়াল জানান যে চিন ও তাইল্যান্ড থেকে প্রচুর মাল কেনেন ব্যবসায়ীরা। এমনকী দিল্লি ও মুম্বইয়ের থেকেও শিলিগুড়িতে বেশি চিনা মাল আমদানি হয় বলে জানিয়েছেন গৌরীবাবু। তবে গত কয়েকদিন ধরেই বরাত ক্যানসেল করছে অনেকে ভাইরাসের ভয়ে। চিনে গিয়ে মাল ওঠানোর সাহস কেউ দেখাচ্ছে না বলেই জানান তিনি।
গুয়াংডং রাজ্যের গুয়াংজাউ ও ঝেজিয়াং রাজ্যের ইয়ু শহর থেকে নিজেরা গিয়ে মাল বাছাই করেন শিলিগুড়ির ব্যবসায়ীরা। হংকং ও সিঙ্গাপুর ঘুরে কলকাতা বন্দরে মাল আসত। তারপর সেগুলি সড়কপথে শিলিগুড়ি যেত। এমনই এক ব্যবসায়ী সঞ্জয় বনসন যিনি বিদেেশী ছাতার ব্যবসা করেন। লোক মরছে চিনে, সেখানে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই, সাফ জানিয়েছেন তিনি। আরেক আমদানিকারক জ্যৌতি বনসল বলেন যে সমস্ত অর্ডার ক্যানসেল করে দেওয়া হয়েছে। উহান শহরে হয়তো মাল বানানো হয়না, কিন্তু ঝুঁকি নিয়ে কী লাভ, তাঁর প্রশ্ন। জুতো, জামা, ছাতা, ব্যাগ, আসবাবপত্র, ক্রকারি ইত্যাদি মূলত চিন থেকে ভারতে আসে।
কোনও সরকারি তথ্য না থাকলেও, প্রায় ৫০ কোটি টাকার মাল চিন থেকে আমদানি করা হয়। শুধু শিলিগুড়িতেই এমন ৫০০ ব্যবসায়ী আছেন যারা চিন থেকে মাল কিনে উত্তরপূর্ব সহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পাঠায়।
শিলিগুড়ির গোল্ডেন প্লাজা হাউজিংয়ে প্রায় ১০০টি দোকান আছে যারা প্রায় সবাই চিনের মাল বেচে। তার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট প্রেম আগরওয়াল বলেন যে গোটা দেশে এক ছাদের নীচে এতজন আমদানিকারক খুঁজে পাবেন না।
আপাতত অবশ্য বাজারে চিনা মালের অভাব নেই কারণ পর্যাপ্ত পুরোনো স্টক আছে। কিন্তু বেশিদিন এই করোনাভাইরাসের প্রভাব থাকলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়বেন। চাইনিজ নববর্ষের সময় ওখানে ব্যবসা বন্ধ থাকে এমনিতেই। তবে অন্য বছর এই সময় থেকে ফের নয়া মাল ঢুকতে থাকে বাজারে যা এবছর হচ্ছে না। তবে গরমকালে সবচেয়ে বেশি ব্যবসা হয়। তার আগে এই সমস্যা মিটে যাবে, এর আশায় ব্যবসায়ীরা।