পেরেছে হিমাচল প্রদেশ, পেরেছে মধ্যপ্রদেশ। কিন্তু এখনও পিছিয়ে রয়েছে বাংলা। হাসপাতাল থেকে নিয়মিত বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য (মাস্ক, গ্লাভস) সংগ্রহ করা হলেও বাড়িতে সেই বন্দোবস্ত নেই। ফলে যেসব বাড়ির লোকজন কোয়ারেন্টাইনে আছেন, তাঁদের মাস্ক, গ্লাভস জাতীয় বর্জ্য নিয়ে চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে।
আরও পড়ুন :Coronavirus Update: করোনা আক্রান্ত ৪২ শতাংশের বয়স ২১-৪০, চিকিৎসাধীনদের ৫৮ জনের অবস্থা জটিল
যেসব বাড়ির সদস্যরা কোয়ারেন্টাইনে আছেন, তাঁদের বাড়ি থেকে যে মাস্ক ও গ্লাভস বর্জ্য পাওয়া যায়, সেগুলিকে 'গৃহস্থের বিপজ্জনক বর্জ্য' হিসেবে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। কীভাবে সেগুলি সংগ্রহ করা উচিত, তা নিয়ে নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : Covid-19: কথা বলা, নিশ্বাস নেওয়া থেকেও ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস, দাবি গবেষকদের
নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, এই ধরনের বর্জ্য (কমন বায়ো-মেডিক্যাল ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট ডিসপোজাল ফেসিলিটিস - সিবিডব্লুউটিএফ) বাড়ি থেকে হলুদ ব্য়াগে করে সংগ্রহ করতে হবে। প্রশাসনের তরফেই সেই ব্যাগ দেওয়া হবে। বর্জ্য সংগ্রহের জন্য প্রশিক্ষিত একটি দলও থাকবে। তাঁদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষাবরণী থাকতে হবে। কোন কোন বাড়ি থেকে এরকম বর্জ্য মিলবে, তারও একটা সম্পূর্ণ তালিকা তৈরি রাখতে হবে বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।
আর পড়ুন : Coronavirus Update: আগামীকাল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের পর জ্বালাবেন না প্রদীপ-মোমবাতি
কিন্তু শুধু নামেই রয়েছে নির্দেশিকা। আদতে বাড়ির অন্যান্য জঞ্জালের (সলিড অ্যান্ড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট) মতোই সংগ্রহ করা হচ্ছে বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য। অর্থাৎ রাজ্যের প্রায় ৫০,০০০ জন কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও তাঁদের বর্জ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা মেনে চলা হচ্ছে না। রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব সুব্রত গুপ্ত বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতাল থেকে বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য সংগ্রহ ও ফেলার প্রক্রিয়া চালায় স্বাস্থ্য দফতর। এর সঙ্গে পুরসভা কোনওভাবেই যুক্ত নেই।'
আরও পড়ুন :নমোর আহ্বানে ঘরের আলো নিভিয়ে জ্বালালে বিপদের সম্ভাবনা নেই, ব্যাখ্যা কেন্দ্রের
বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের সচিব ও অধিকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁদের ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে এক সিবিডব্লুউটিএফ কর্তা জানান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য সংগ্রহের বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতর এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি। মেডিকেয়ার এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্টের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজরা কৃষ্ণেন্দু দত্ত বলেন, 'শুধুমাত্র হাসপাতাল থেকে আমাদের বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। (বাড়ির) দরজা থেকে এরকম বর্জ্য সংগ্রহ বা বাড়িতে হলুদ ব্যাগ দেওয়ার বিষয়ে আমাদের কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি।'
আরও পডুন : 'তোমার মতো মানুষই তো ভারতবাসীর অনুপ্রেরণা', বাদশার প্রশংসায় 'মমতা দিদি'
অথচ হিমাচল প্রদেশে ইতিমধ্যে বাড়ি থেকে বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। সেজন্য একটি প্রশিক্ষিত টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে শিমলা পুরনিগম। কর্মীদের এন-৯৫ মাস্ক ও স্যানিটাইজার দেওয়া হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরেখা কোহপদা বলেন, '(বর্জ্য) সংগ্রহ করতে যাওয়ার আগে কোয়ারেন্টাইন থাকা বাড়িগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়। তাঁদের (কর্মীদের) হলুদ জঞ্জাল ব্যাগ, জীবাণুনাশক ও গ্লাভস দেওয়া হয়। যিনি জঞ্জাল সংগ্রহ করেন, তিনি সেই হলুদ ব্যাগটি অপর একটি ব্যাগে রেখে দেন। তা সিল করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।' মধ্যপ্রদেশেও একইভাবে বাড়ি থেকে মাস্ক, গ্লাভসের মতো বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়। কখনও কখনও জঞ্জালের গাড়ি পাড়ায় ঢোকা নিয়ে আপত্তি জানান স্থানীয়রা। যদিও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, পুরোটাই বৈজ্ঞানিকভাবে করা হয়।
আরও পড়ুন : Coronavirus Update: বাড়িতে তৈরি মাস্ক পরুন, পরামর্শ কেন্দ্রের
আর সেটাই অভাব বাংলায়। অথচ বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে সংক্রমণের সম্ভাবনা আরও বাড়ে। কারণ যাঁরা হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন, পরবর্তী সময় তাঁদের শরীরেও করোনার অস্তিত্ব পাওয়া যেতে পারে। সেজন্য আগেভাগেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আপাতত রাজ্যে তা অমিল।