ফের সালিশি সভায় বর্বরতা। প্রেম ঘটিত কারণে এক যুগলের মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। শুধু তাই নয়, এরপর তাদেরকে দীর্ঘক্ষণ বেঁধে রাখা হল এবং চড় থাপ্পড়ও মারা হল। গ্রামের কিছু মানুষের বিরুদ্ধে এই কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর থানার রুইয়া এলাকায়। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
আরও পড়ুন: সালিশি সভার নামে ফের তৃণমূল নেতার দাদাগিরি, যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর
জানা যাচ্ছে, ঘটনার একটি ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) ভাইরাল হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, একসঙ্গে হাত বেঁধে রেখে বসিয়ে রাখা হয়েছে যুগলকে। তাদের দুজনের মাথার চুল ন্যাড়া করা। এমন ঘটনা সামনে আসতেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের দাবি, ঘটনাটি আদিবাসী সমাজের। খবর পেয়ে তিনি সেখানে গিয়ে যুগলকে রক্ষা করেন। তাদের ছাড়িয়ে তিনি খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন।
জানা গিয়েছে, ইসলামপুর ব্লকের ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রুইয়া আদিবাসী গ্রামের এক বিবাহিত মহিলা গ্রামেরই এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। ওই মহিলার ৪ সন্তান রয়েছে। ক্রমে তাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। এরপর তারা দুজনে একসঙ্গে পালিয়ে যান। এদিকে, বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মহিলার স্বামী এবং তার পরিবারের সদস্যরা। তখন বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে আদিবাসীরা যুগলকে উদ্ধার করেন। এরপর গ্রামে এনে সালিশি সভার আয়োজন করা হয়। অভিযোগ, সালিশি সভাতে মহিলার স্বামী তাকে চড় থাপ্পড় মারেন। এরপরে গ্রাম্য সভায় তাদের চুল কেটে ন্যাড়া করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্তের পর ওই যুগলের মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে বেঁধে রাখা হয়। এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই এলাকা জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠতে শুরু করেছে।
গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য এমডি হাফিজ আলম জামান, এর আগে যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে ওই মহিলা ধরা পড়েছিলেন। এরপরে তারা একসঙ্গে বিহারে পালিয়ে যান। তখন গ্রামবাসীরা দুজনকে বিহার থেকে ধরে আনেন। এরপরে সালিশি সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ন্যাড়া করে দেওয়ার। পঞ্চায়েত সদস্য জানান, তিনি নিজে আইনি পদক্ষেপের কথা জানাতেই আদিবাসীরা তাতে আপত্তি জানায়। তাদের দাবি, আদিবাসী সমাজের নিয়ম মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এ ধরনের কাজ না করে সেই কারণে আদিবাসী সমাজের তরফে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান পঞ্চায়েত সদস্য। অন্যদিকে, এই ধরনের ঘটনা যদি ঘটে থাকে তাহলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ইসলামপুর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।