২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর শোরগোল পড়ে গিয়েছিল নদিয়ার কালিগঞ্জ থানা এলাকায়। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় এক কিশোরীকে অ্যাসিড হামলার অভিযোগ উঠেছিল। প্রায় চার বছর পর সেই মামলায় অভিযুক্ত দুই যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা শোনালো আদালত। দুজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে কৃষ্ণনগর জেলা আদালত। একইসঙ্গে কিশোরীকে ক্ষতিপূরণ বাবদ এক লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: দিদি- জামাইবাবুর সঙ্গে ঝগড়া, রাগের মাথায় অ্যাসিড ছুঁড়লেন যুবক
কৃষ্ণনগর জেলা আদালতের বিচারক সুস্মিতা গাইন ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৬ ধারায় সোমবার দুই যুবককে দোষী সাব্যস্ত করেন। আর মঙ্গলবার তাদের সাজা ঘোষণা করেছেন। আদালত সূত্রের খবর, ঘটনায় মূল অভিযুক্ত যুবক কিশোরীর গ্রামেরই বাসিন্দা। তার নাম ওয়াসিম মণ্ডল। অভিযোগ ছিল, অনেকদিন ধরেই ওই যুবক কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু, প্রতিবারই কিশোরী প্রেমের ফিরিয়ে দিয়েছিল। বিষয়টি এতদূর গড়িয়ে যায় যে শেষ পর্যন্ত যুবকের পরিবার কিশোরীর বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়। কিন্তু, সেক্ষেত্রেও যুবককে খালি হাতেই ফিরতে হয়। কিশোরীর পরিবার সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। অভিযোগ ওঠে, সেই ক্ষোভেই কিশোরীর উপর যুবক হামলা চালায়। ঘটনার রাতে কিশোরী বাড়ির বারান্দায় ঘুমোচ্ছিল। সেই সময় অন্য সাহেব মোল্লা অন্য যুবককে সঙ্গে নিয়ে কিশোরীর বাড়িতে যায় ওয়াসিম। দুজনে বারান্দায় ঢুকে পড়ে। সাহেব কিশোরীর মুখ চেপে ধরে আর ওয়াসিম তার সারা শরীরে অ্যাসিড ঢেলে দেয়। মেয়েটি চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকলে কেউ সেখানে আসার আগেই পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। এর পরের দিনই কালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। ৭ দিনের মধ্যেই অভিযুক্তদের ধরে ফেলে পুলিশ।
২০২২ সাল থেকে মামলার শুনানি হয়। মামলা চলাকালীন ১৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। অবশেষে সোমবার বিচারক যুবকদের দোষী সাব্যস্ত করেন। আর মঙ্গলবার তাদের সাজা ঘোষণা করেন। এবিষয়ে আদালতের সরকারি আইনজীবী কুতুবুদ্দিন বিশ্বাস জানান, ওই যুবক মেয়েটিকে নানাভাবে উত্যক্ত করে আসছিল। মেয়েটি বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে সে এই কাণ্ড করে। দু'জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।