এক বছর ধরে মন্দিরেই অধিষ্ঠিত ছিলেন বীরভূমের দুবরাজপুরে পাহাড়েশ্বর মন্দিরের শ্মশান কালী। করোনা আবহের মধ্যেই প্রতি বছরের মতো একাদশীর দিনই নিরঞ্জন হল দেবীর। নিয়ম মেনে এদিন থেকেই নতুন মূর্তি গড়া শুরু করলেন বৈষ্ণবরা। এখানে শ্মশান কালী পূজিত হন বৈষ্ণবদের হাতে।
পাহাড়েশ্বর মন্দিরের শ্মশান কালী নিরঞ্জন কেন্দ্র করে প্রতি বছরের মতো এই বছরও মানুষের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো। করোনা কালেও দূরদূরান্ত থেকে মানুষের এই আগমনকে রোখা যায়নি। এবারে নিরঞ্জন যাতে সুষ্ঠুভাবে হতে পারে, সেজন্য বাঁশের ব্যারিকেডের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই ব্যারিকেডের ধারেই প্রচুর মানুষ এদিন জমা হয় নিরঞ্জন দেখতে।
এলাকার এক বাসিন্দা গুরুপদ দাস জানান, এই শ্মশান কালী নিরঞ্জনের দায়িত্ব দেওয়া হয় দাস পরিবারের হাতে। প্রতি বছর দাস পরিবারের লোকেরাই দেবীকে নিরঞ্জন দিয়ে আসছেন। এর আগে অন্য সম্প্রদায়ের লোকেদের এই নিরঞ্জনর দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে বিঘ্ন ঘটে। এরপর থেকে দাস পরিবারের লোকেরাই এই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এদের কাছে দুর্গা পুজোর সময় যতটা আনন্দের, তার থেকেও বেশি আনন্দের এই শ্মশান কালী নিরঞ্জন দেওয়া।
এদিন গুরুপদ জানান, প্রতি বছর একটি পুকুরে নিরঞ্জন দেওয়া হয়। এতে প্রায় দুই আড়াই ঘণ্টা লেগে যায়। ফলে প্রচুর মানুষ অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করেন এই মূতি নিরঞ্জন হওয়া দেখতে। একইসঙ্গে তিনি জানান, ‘নিরঞ্জনের পর শ্মশান কালী তৈরি করেন বৈষ্ণবরা। তাঁরাই পুজো করেন। সারা বছর ধরে মায়ের নিত্য পুজো হয়। এরপর দুর্গাপুজোর দশমীর পর যে একাদশী হয়, সেদিনই মায়ের নিরঞ্জন হয়।’ এবারে এই নিরঞ্জনকে কেন্দ্র করে উন্মাদনা থাকলেও যাঁরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া কারও মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা। শেষপর্যন্ত ভিড়ে ঠাসাঠাসি করেই চলে নিরঞ্জন দেখা।