মোটের উপর প্রথমদিন ভালোভাবেই কাটল বাংলার করোনাভাইরাস টিকাকরণ প্রক্রিয়া। কয়েকটি জায়গায় কো-উইন অ্যাপে বিক্ষিপ্ত বিভ্রাট ছাড়া বাকি রাজ্যে টিকা প্রদানের প্রক্রিয়া মসৃণভাবেই চলেছে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। তবে টিকা নেওয়ার পর কলকাতায় একজন এবং রামপুরহাটে একজন অসুস্থ পড়েছেন। টিকা নেওয়ার ফলে তাঁরা অসুস্থ পড়েছেন কিনা, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় স্বাস্থ্য দফতর।
শনিবার প্রায় ২০,৭০০ প্রথমসারির করোনা যোদ্ধাকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতরের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যের ২০৭ টি কেন্দ্রে ১৫,৭০৭ জন টিকা নিয়েছেন। কলকাতায় টিকা নিয়েছেন প্রায় ৯২ শতাংশ। প্রতিটি কেন্দ্রের ১০০ জনকে টিকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সূত্রের খবর, সব কেন্দ্রে ১০০ জন করে আসেননি। কোথাও ৭০ জনের মতো প্রথমসারির করোনা যোদ্ধা এসেছিলেন। যাঁরা আসেননি, তাঁদের অনেকের সঙ্গে কথাও বলা হয়েছে। বাকিরা কেন আসেননি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর।
লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও মোটামুটি নির্বিঘ্নেই চলেছে টিকাকরণ প্রক্রিয়া। মুর্শিদাবাদের কান্দি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো কয়েকটি জায়গায় কেন্দ্রের কো-উইন অ্যাপে বিভ্রাট দেখা দিয়েছিল। স্বাস্থ্য কর্তারা জানিয়েছেন, জেলার কয়েকটি কেন্দ্রে কো-উইন অ্যাপে তথ্য আপলোডের ক্ষেত্রে বাড়তি সময় লেগেছে। মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমা হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, ‘যাঁরা টিকা পাচ্ছেন, তাঁদের তথ্য (অ্যাপে) আপলোড করার কথা ছিল। কিন্তু অ্যাপটি এত ঢিমেতালে কাজ করছে যে অনেক সময় লাগছে। বাকি সব ঠিকঠাক আছে।’ একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি হাসপাতালও। সেখানকার এক চিকিৎসক বলেন, ‘অ্যাপ খুলছে না। বারবার লগ-ইন, লগ-আউট করতে হচ্ছে। অত্যন্ত ঢিমেতালে চলছে। হাতকলমে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।’ পাশাপাশি আগামী সপ্তাহে সোমবার, মঙ্গলবার, শুক্রবার এবং শনিবার টিকা প্রদান করা হবে।
তারইমধ্যে টিকা নেওয়ার পর কমপক্ষে ১৪ জনের মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (টিকাকরণের পর বিরূপ প্রতিক্রিয়া) দেখা দিয়েছে। যা প্রতি ১,০০০ জনে একজনেরও কম। রামপুরহাট হাসপাতালের এক স্বাস্থ্যকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর মৃদু প্রতিক্রিয়াও দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, টিকা নেওয়ার কলকাতার ফুলবাগানের বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতালের এক নার্স সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। দ্রুত স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের কথা বলে বছর ২৫-এর ওই নার্সকে সেখানেই ভরতি করা হয়। ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তরিত করে তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে খবর। আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘(টিকা নেওয়ার পর) উনি কাঁপতে শুরু করেছিলেন এবং তাঁকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর অবস্থা ভালো এখন। স্বামী জানিয়েছেন যে ছোটোবেলায় থেকে উনি কয়েকটি ওষুধে তাঁর অ্যালার্জি ছিল। এটা চিন্তার বিষয় নয়। কারও কোনও ওষুধের অ্যালার্জি থাকলে এরকম মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়।’