জেলা সম্মেলনে পদ হারানো নেতা আসবেন না বলেই অনেকে ধরে নিয়েছিলেন। যখন তাঁর বিরুদ্ধে মহিলাঘটিত অভিযোগ রয়েছে। তাই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল জেলা সম্পাদক পদ থেকে। এমন অবস্থায় তিনি আসবেন না বলেই ধরে নিয়েছিলেন অনেক কমরেড। কিন্তু অনুমান করা সেই খবর মিলল না সিপিএম নেতাদের। অবশেষে কোনও লজ্জা না করে সটান রবিবার খড়্গপুরে পশ্চিম মেদিনীপুরের সিপিএমের জেলা সম্মেলনে হাজির হলেন সুশান্ত ঘোষ। তাঁকে দেখে অনেকে ভূত দেখার মতো দেখতে শুরু করলেন। আর তারপরই সুশান্ত ঘোষের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখলেন উপস্থিত কমরেডরা।
এখানে দেখা গেল, প্রাক্তন জেলা সম্পাদক দীপক সরকার যেখানে বসেছিলেন সেখান থেকে কিছুটা দূরে চেয়ারে এসে বসেন সুশান্ত ঘোষ। কিছুক্ষণ দীপক সরকারের সঙ্গে কথাও বলতে দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু বিশেষ সাড়াশব্দ না মেলায় চুপ করেই বসে রইলেন সুশান্ত ঘোষ। এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ নেতা বিমান বসু। বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা তথা বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু থাকা সত্ত্বেও জেলা সম্মেলনের পতাকা উত্তোলন করতে দেখা যায় দীপক সরকারকে। যদিও বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিতেই এক সিপিএম নেতা বলেন, ‘বিমানদা যেমন আমাদের নেতা, দীপকদাও তো আমাদের নেতা। বিতর্ক তৈরি না করাই ভাল।’
আরও পড়ুন: শাসক সিপিএমের বিরুদ্ধে আবার লড়াই শুরু তৃণমূলের, বড় দায়িত্ব পেলেন পিভি আনভার
খড়গপুর শহরের অন্ধ্র হাইস্কুলে শুরু হয় সিপিএমের জেলা সম্মেলন।এই জেলা সম্মেলন সুশান্ত ঘোষ এড়িয়ে যাবেন বলেই কমরেডরা মনে করেছিলেন। কিন্তু সেই মনে হওয়া ভুল প্রমাণিত হল। মহিলাঘটিত অভিযোগ ওঠায় সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে কমিশন বসিয়েছিল সিপিএম। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদকের পদ থেকে তখন সরিয়ে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, সুশান্ত ঘোষ যাতে না আসেন তা নিয়ে সতর্ক করে সম্মেলনের আগে নেতারা জেলা কমিটিকে বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে লাভ হল না। বরং সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘কেন আসব না? কে কী বলল, সেটা নিয়ে উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলনের পর দীপক সরকার জমানার অবসান ঘটতে পারে। একদা সুশান্ত ঘোষ, বিজয় পাল, মেঘনাদ ভুঁইয়া, সমর মুখোপাধ্যায়রা সবাই দীপক সরকারের অনুগামী ছিলেন। সুশান্ত ঘোষকে সরিয়ে দেওয়ার পর বিজয় পালকে জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এখন দীপকের অনুগামীরা তিনটি গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বিজয় পাল জেলা সম্পাদক থাকতে চান। আর তাই বাকি গোষ্ঠী থেকে কিছুটা সরে গিয়েছেন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিপিএমের প্রবীণ নেতার বক্তব্য, ‘রাজ্য নেতৃত্ব চায় না ভোটাভুটি হোক। কারণ, এখন দলের অবস্থা তো খুব একটা ভাল নয়। বরং পরিস্থিতি যা সেটাতে ভোটাভুটি আটকানো অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে।’