হল না। কিছুতেই হল না। রাত ১২ পর্যন্ত বৈঠক গড়াল। তারপরও হল না। সিপিএমের তিনদিনের জেলা সম্মেলন হল। কিন্তু শেষদিন রাত ১২টা পর্যন্ত তা চললেও উত্তর ২৪ পরগনায় সিপিএমের জেলা কমিটি গঠন হল না। আর তার জেরেই প্রকাশ্যে চলে এল সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটি গঠন ঘিরে গোষ্ঠীকোন্দল। অবশেষে সুজন চক্রবর্তী এবং শ্রীদীপ ভট্টাচার্য জানিয়ে দেন, আগামী রবিবার সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির অফিসে ভোট হবে। এই যদি অবস্থা হয় তাহলে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শূন্যতা কাটবে কেমন করে? দলের অন্দরের বহু কমরেডই এখন এই প্রশ্ন তুলছেন।
এদিকে এই সমস্যা মেটাতে তিনবার সম্পাদকমণ্ডলী বৈঠক বসে। তিনবার জেলা কমিটির বৈঠক বসলেও বেরিয়ে এল না রফাসূত্র। তাই গতবারের সম্মেলনের মতো এবারও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটি গঠন অমীমাংশিত থাকল। তার সঙ্গে সম্মেলনে কাঁটা হয়ে রয়ে গেল সাসপেন্ডেড নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যর বইমেলায় বিজেপির বুকস্টলে যাওয়া নিয়ে চর্চা। শুক্রবার থেকে বারাসতের রবীন্দ্র ভবনে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের ২৬তম সম্মেলন শুরু হয়। সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তীকে বদল করা নিয়ে সমালোচনায় সরব হন অনেকে। লোকসভা নির্বাচনে ব্যারাকপুর থেকে তারকা প্রার্থী করা হয়েছিল। তাঁর দিনে প্রচারে অনীহা, শেষপর্বে জোট ঘোষণা, উপনির্বাচনে নৈহাটি থেকে লিবারেশনের প্রার্থী করা নিয়ে সমালোচনা তুঙ্গে ওঠে। আর সম্পাদক হিসাবে উঠে আসে পলাশ দাস, সোমনাথ ভট্টাচার্য, সন্দীপ মিত্রের নাম।
আরও পড়ুন: ‘২০২৬ সালে বাংলায় আমরা ক্ষমতায় আসব’, বঙ্গে এসে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
অন্যদিকে সম্মেলন শেষে দলীয় নেতৃত্ব জেলা কমিটির ৭৪ জনের নামের প্যানেল পেশ করেন। তাতে আপত্তিও ওঠে। তখন বিকল্প ২৭ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়। তখনই আসরে নামেন মানস মুখোপাধ্যায়। সমস্ত চেষ্টা জলে যাওয়ার পর তিনি ঘোষণা করেন ভোটাভুটির মধ্যে তিনি থাকতে চান না। তার নাম প্যানেল থেকে প্রত্যাহার করেন। তখন ২৫ জন নাম প্রত্যাহার করেন। এই আবহে ভোটাভুটি প্রক্রিয়া এড়িয়ে যেতে পারল না সিপিএম। ঠিক হয় আগামী রবিবার ভোট হবে। শনিবার মাঝরাত পর্যন্ত হয়েছিল জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক। তখনই আপত্তি তোলে এরিয়া কমিটিগুলি। সম্মেলনের শেষ দিনে উপস্থিত ছিলেন মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, শ্রীদীপ ভট্টাচার্যরা।
এছাড়া শেষ পর্যন্ত কারা জেলা কমিটিতে আসছেন, কে সম্পাদক হচ্ছেন সেটা নিয়ে মাঝরাত পর্যন্ত সমাধানসূত্র না মেলায় এখন পরিস্থিতি থেকে মুখ বাঁচাতে ভোটাভুটি আটকানোই একমাত্র লক্ষ্য আলিমুদ্দিনের। তবে মধ্যমগ্রাম এবং বিধাননগর এলাকার দু’জন প্রতিনিধি নাম প্রত্যাহার করতে রাজি নন। ফলে মাত্র দু’জনের জন্য এখন ভোটের প্রস্তুতি চলছে। সিপিএমের সব জেলা সম্মেলন ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। বাকি ছিল উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে ওঠে।