২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়ছে। ক্ষমতা রক্ষায় তৃণমূল যেমন সংগঠন শক্ত করতে ব্যস্ত, ঠিক তেমনই হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া বামফ্রন্টও। এমন পরিস্থিতিতেই হুগলির পাণ্ডুয়ার শ্রীরামবাটি সমবায় সমিতির ভোটের ফল আশার আলো দেখালো বাম শিবিরকে। দীর্ঘ দশক পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে ১১টি আসনের মধ্যে ১১টিতেই জয়ী হয়েছেন সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: ধূপগুড়িতে সমবায় নির্বাচনে লাল ঝড়, বিপুল জয় বামেদের, ধরাশায়ী তৃণমূল কংগ্রেস
শ্রীরামবাটি সমবায় সমিতি গত দশ বছর ধরে তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণে ছিল। স্থানীয় মহলের দাবি, এই সময়কালে সমবায়ের উপর মানুষের আস্থা ক্রমে ক্ষয় হতে থাকে। এ বছর যখন বহু প্রতীক্ষিত নির্বাচনে কৃষক, ক্ষেতমজুর, বরগাদার থেকে শুরু করে পাট্টাদার বাম প্রার্থীদের প্রতি নিজেদের সমর্থন স্পষ্ট করলেন ভোটবাক্সে। ফলাফল ঘোষণা হতেই লাল শিবিরে উচ্ছ্বাস। কারণ এটি শুধু একটি সমবায় জয় নয়, জমি ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ের প্রথম ধাপ।
পাণ্ডুয়ার প্রাক্তন বিধায়ক আমজাদ হোসেন সরাসরি তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বলেন, চার মাস আগেই ভোট হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তৃণমূল তা আটকে দিয়েছিল। কারণ তারা জানত মানুষের আস্থা ফিকে হয়ে গিয়েছে। দশ বছর ধরে সমবায়কে নিজেদের দখলে রেখে লুটপাট চালিয়েছে। এবার মানুষ দুর্নীতিমুক্ত সমবায় চেয়েছে। এই ফল আসন্ন পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
অন্যদিকে, অনাকাঙ্ক্ষিত ফলের পর আত্মসমালোচনায় ব্যস্ত পাণ্ডুয়ার ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের প্রাক্তন সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ স্বীকার করেছেন সংগঠনের ভিতরে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। তাঁর কথায়, কেন এমন ফল হলো, তা দলের ভিতরে আলোচনা হবে। মুখ্যমন্ত্রী এত উন্নয়ন করেছেন, তবুও মানুষ যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তা ভাবার বিষয়। প্রসঙ্গত, হুগলি জেলার মতো এলাকায় বামেদের এই পুনরুত্থান ২০২৬ ভোটের আগে বড় ভূমিকা নিতে পারে। এই সমবায় জয় নিঃসন্দেহে বাম কর্মী সমর্থকদের পুনরুজ্জীবিত করল।