অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হতেই বিরোধীরা একটু অক্সিজেন পেয়েছেন। আর সেই অক্সিজেন দিয়ে শ্বাস নিয়েই মাঠে নেমে পড়েছেন বিরোধী দলগুলির নেতা–নেত্রীরা। যাঁরা অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁর সামনে দাঁড়ানোর সাহস পেতেন না। এখন এই ইস্যুতে বৃহস্পতিবার আসানসোল দেখতে পেল বাম–বিজেপির অভূতপূর্ব ঐক্য। এই দৃশ্য দেখে অবশ্য অনেকেই বলছেন, হাতি যখন কাদায় পড়ে চামচিকেও লাথি মারে।
ঠিক কী ঘটেছে আসানসোলে? অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হতেই মাঠে নেমে পড়ে বাম–বিজেপি। আদালত চত্বরে পৌঁছে যান সিপিআইএমের নেতা–কর্মী–সমর্থকরা। তাঁদের হাত থেকে বিলিয়ে দেওয়া হয় নকুল দানা। প্ল্যাকার্ডে ‘চড়াম চড়াম’ লিখে চলে অনুব্রত মণ্ডলকে কটাক্ষ। জোর প্রতিবাদের সঙ্গে তুমুল বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। পুলিশ অবশ্য তাঁদের সরিয়ে দেয়। বামেরা ‘নকুল দানা’ দেখানোর পাশাপাশি অনুব্রতকে বিঁধতে ঢাক নিয়েও হাজির হন। চড়াম চড়াম ঢাক বাজিয়ে তাঁরা উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করতে থাকেন। তার কিছু পরেই সেখানে পৌঁছন বিজেপির কর্মী–সমর্থকরা। তাঁদেরও হাতে ছিল নকুল দানা। আবেগে আনন্দে নাচতে থাকেন বিজেপির মহিলারা। সিপিআইএমের চড়াম চড়াম ঢাকের তালে তাঁরাও নেচেছেন প্রাণ খুলে। অনুব্রত গ্রেফতার ইস্যুতে আসানসোলে বাম–বিজেপি যেভাবে আনন্দে মেতে উঠল এবং ঐক্য দেখাল, তা বাংলার রাজনীতিতে এক বিরল দৃশ্য!
আর কী দেখা গিয়েছে? বীরভূমের প্রত্যেক এলাকায় বাম–বিজেপির একসঙ্গে পতাকা নিয়ে নামতে দেখেছেন মানুষজন। অনেকেই খোঁচার সুরে বলে ওঠেন, বাম–রামের জোট হয়ে গেল নাকি! বাম–বিজেপির ভোট ট্রান্সফারের বিষয়টি আগেই দেখেছেন বাংলার মানুষ। এবার তাঁদের একসঙ্গে আনন্দ করতে দেখলেন বঙ্গের মানুষজন। অন্যান্য জেলা থেকেও এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে। আসানসোলে এই ছবি বেশি সময় ধরে দেখা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বীরভূম ছাড়ার পর কাঁকসা থানার একটি হোটেলে দাঁড়ায় সিবিআই টিম। সেখানে বিশ্রাম নেওয়ার পরই তাঁরা আদালতের পথে রওনা দেন। তবে দুর্গাপুর–আসানসোলে আসার জল্পনা উড়িয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে তাঁরা প্রথমে সিআইএসএফের তালুক কুলটির শীতলপুর গেস্ট হাউসে যান। সেখানেই সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প। অনুব্রতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ইসিএলের চিকিৎসকরা তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করেন।