সেই চাঁদিফাটা গরম নেই। বর্ষাও চলছে পুরোদমে। তার মাঝেই শহর শিলিগুড়িতে পানীয় জলের ভয়াবহ সঙ্কট। কোথাও জল পড়ছে সরু ধারায়। কোথাও আবার জলের দেখা নেই। বাসিন্দাদের দাবি প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে এই সংকট চলছে। কিন্তু পুর প্রশাসনের কোনও মাথাব্যাথা নেই। শহরের ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে অন্তত ৩০টি ওয়ার্ডে জলের সংকট মাথাচাড়া দিয়েছে। অনেকেই জল কিনে খাচ্ছেন। এদিকে এই জলসংকটকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে চাপানউতোর চরমে উঠেছে। তবে বিগতদিনে অশোক ভট্টাচার্য পুরসভায় দায়িত্বে থাকাকালীন জলসংকট মাথাচাড়া দিয়েছিল। সেই সময় তৃণমূল লাগাতার আন্দোলনে নেমেছিল। বর্তমানে পুর প্রশাসক বোর্ডের মুখ্য প্রশাসক হিসাবে রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব। এবার সুযোগ বুঝে সেই কর্পোরেশনকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বাম নেতৃত্ব।
কর্পোরেশনের প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, 'আমার সময়ে জল সরবরাহ নিয়ে সামান্য সমস্যা হওয়ার কারনে কী হেনস্থাটাই না করা হয়েছিল। এখন সারা সপ্তাহ ধরে জল নেই। প্রশাসক বোর্ডের অপদার্থতার জন্য এই অবস্থা হয়েছে।' শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘এখনকার প্রশাসকের অশোক ভট্টাচার্যর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ এদিকে শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের প্রশাসক গৌতম দেব বলেন, ‘আগামীকালের মধ্যে জল সমস্যা প্রাথমিকভাবে মিটে যাবে। কিন্তু পুকুরগুলিতে এত পলি জমেছে তা না সরানো পর্যন্ত জলের পরিমাণ বাড়ানো যাচ্ছে না। জনস্বাস্থ্য দফতরে ডিপিআর পাঠানো হয়েছে।’
কর্পোরেশন সূত্রে খবর, ১৯৯৪ সালে শিলিগুড়ির জন্য চালু হয়েছিল মহানন্দা জল প্রকল্প। এটাই শহরের জলের অন্যতম উৎস। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় গজলডোবা জলপ্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ৬০০ কোটির সেই প্রকল্পের অগ্রগতি বিশেষ হয়নি। বাম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘আমি যতদিন ছিলাম গজলডোবা করতেই দেয়নি। এখন তো ওদেরই সরকার। জলপ্রকল্পটা অন্তত করুক। রাজনীতির জন্য রাজনীতি করে আমরা বাধা দেব না। ’