নদীতে স্নান করার সময় হঠাৎই জলে ভেসে উঠল একটি বৃহদাকারী প্রাণী। পরে জানা যায়, আসলে প্রাণীটি অন্য কিছু নয়, সেটি হল আস্ত একটি কুমির। আর তারপরেই আতঙ্কে কার্যত নদীতে নামা বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয়রা। নদিয়ার মায়াপুরের তারিণীপুর ঘাটে এই কুমির দেখতে পাওয়া যায়। তা ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়। খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। কিন্তু, তারা কিছুই দেখতে পায়নি। খালি হাতেই ফিরে যেতে হয় তাদের। তবে বন দফতরের তরফে নদীতে নামা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নদিয়ায় ভাগীরথী নদীতে একসঙ্গে দেখা গেল তিনটি কুমির, পালালেন মৎসজীবীরা
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ণ বয়স্ক এই কুমিরটিকে দেখা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে জলঙ্গি নদীর মায়াপুরের তারিণীপুর ঘাটে। প্রথমে একজন কুমির দেখতে পান। এরপরে তিনি অন্যান্যদের খবর দেন। পরে টর্চ জ্বালাতেই কুমিরটি সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তবে এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি। ঝড়ের গতিতে গোটা এলাকায় নদীতে কুমির দেখতে পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে।
খবর দেওয়া হয় মায়াপুর পুলিশ ফাঁড়ি এবং বন বিভাগকে। তবে কুমিরটিকে আর দেখতে না পাওয়ায় বন কর্মীরা ফিরে যান। একইসঙ্গে কুমির নিয়ে স্থানীয়দের সতর্ক করেন বন কর্মীরা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, স্নান করার সময় জলে কুমির দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। মিলন দাস নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘রাত ৯টা ২০ মিনিট নাগাদ হঠাৎ দেখি ঘাটের জলে কিছু একটা নড়ছে। ঘাটে থাকা আলোতে বোঝা যায় সেটি একটি কুমির। তখন টর্চ জ্বালাতেই কুমিরটি অন্যদিকে চলে যায়। তারপরে আর কুমির দেখা যায়নি।’
ঘাট কর্তৃপক্ষের তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘কুমির দেখার পরেই স্থানীয়দের আমরা ঘাটে নামতে নিষেধ করেছি। এরপরে কলের জলেই সকলে স্নান করছেন।’ যদিও বনদফতরের আশ্বাস দেওয়ার পরেও তাদের মধ্যে আতঙ্ক কাটছে না। এলাকায় এখন কুমিরের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমনকী শনিবার আতঙ্কে মাছ ধরতে যেতে পারেনি মৎস্যজীবীরা। শুনশান রয়েছে ঘাট। জানা গিয়েছে, ঘাটে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। সেই ফুটেজেও কুমিরটিকে নদীর জলে স্পষ্ট ভেসে বেড়াতে দেখা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, মায়াপুরের তারিণীপুর ঘাট হল অত্যন্ত জনপ্রিয়। স্বরূপগঞ্জ থেকে তারিণীপুর ঘাট পর্যন্ত প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী পারাপার করে থাকেন। তবে কুমির দেখতে পেয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। উল্লেখ্য, এর আগে নদিয়া জেলায় ভাগীরথী নদীতে বেশ কয়েকবার কুমির ভেসে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। তবে জলঙ্গি নদীতে এর আগে কুমির দেখা যায়নি বলেই দাবি বন বিভাগের ।