দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে বন্যা দেখেছে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি। তারপর ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র দাপট দেখানোয় পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি–সহ অন্যান্য জেলায় চাষ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আর তার জেরে চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। এই আবহে চাষিদের সাহায্য করতে ‘বাংলা শস্য বিমা’ দুয়ারে নিয়ে আসছে প্রশাসন। এই প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির ১০০ শতাংশ কৃষককে বিমার আওতায় আনতে এবার ‘দুয়ারে শিবির’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যেই তা করার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সোমবার থেকেই বিশেষ ক্যাম্প শুরু করে তা করার কাজ হবে। বিমা করার সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত করেছে রাজ্য সরকার।
জেলাশাসকরা ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় চাষবাস নিয়ে রিপোর্ট পাঠাবেন মুখ্যসচিবকে। এটাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ। এই বিষয়ে কৃষি দফতরের হুগলির উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) মৃত্যুঞ্জয় মর্দুনা বলেন, ‘জেলায় এখন আড়াই লক্ষের বেশি চাষির কাছ থেকে বিমার ফর্ম সংগ্রহ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের জেরে নতুন করে আরও অনেক চাষি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তাই বিমার সুযোগ থেকে যাতে কেউ বাদ না যান আমরা সেটা নিশ্চিত করছি। চাষিদের আরও কাছে গিয়ে ক্যাম্প খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সবুজ বাজির আড়ালে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি, শহর–জেলা–ভিনরাজ্যে পৌঁছে যাচ্ছে
কৃষি দফতর সূত্রে খবর, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তাই কৃষকদের বড় সমস্যা হয়। এবার ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র ধাক্কায় আরও ক্ষতি হয়েছে ফসলের। এই পরিস্থিতি দেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে ঘোষণা করেছেন, সমস্ত চাষিরা ‘বাংলা শস্য বিমা’র আওতায় নিয়ে এসে ক্ষতিপূরণ করা হবে। এমন ক্ষতিপূরণ আগেও করেছে রাজ্য সরকার। কৃষি দফতর নানা পঞ্চায়েত অফিসে ক্যাম্প করে বাংলা শস্যবিমার ফর্ম সংগ্রহ করছে। বিমার প্রিমিয়ামের টাকা রাজ্য সরকার দিচ্ছে। তাই বেশি সংখ্যক চাষি বিমার অন্তর্ভূক্ত হন চায় রাজ্য কৃষি দফতর।
একাধিক জেলার জেলাশাসক ক্ষতি নিয়ে রিপোর্ট পেশ করবেন। তারপরই মিলিয়ে দেখে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ করা হবে। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দীর বক্তব্য, ‘ঝড়–বৃষ্টিতে চাষের ক্ষতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিমা করার উপর জোর দিয়েছেন। আগেও চাষিরা ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ আসে না।’ বাংলা শস্য বিমার ফর্ম অনেকেই নিয়েছেন। সেগুলি সই করে জমা পড়তে শুরু করেছে। এই ফর্ম দিতে স্থানীয় স্কুল, পঞ্চায়েত, কমিউনিটি হল এবং চাষিদের দুয়ারে শিবির খুলে ফর্ম দেওয়া হবে। পূরণ করার পর জমাও নেওয়া হবে। তারপর মিলবে অর্থ।