একদিকে ঘূর্ণিঝড় 'জাওয়াদ', অন্যদিকে ভরা কোটাল । এই দুইয়ের কারণে উদ্বেগ বাড়ছে প্রশাসনের। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে উপকূলবর্তী এলাকার মানুষদের। কিন্তু, তারপরেও দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনিক কর্তাদের কপালে। এই দুইয়ের কারণে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা দেখছে রাজ্য প্রশাসন।
শনিবার আমাবস্যার কারণে ভরা কোটাল রয়েছে। সেইসঙ্গে 'জাওয়াদ ' রাজ্যের অনেকটাই কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। যদিও এই ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হবে না বলেই জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। পুরী থেকে তা উপকূল লাগোয়া হয়ে পশ্চিমবাংলার দিকে এগোবে এই ঘূর্ণিঝড়। তবে রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকার কাছাকাছি পৌঁছানোর সময় জাওয়াদের শক্তি অনেকটাই হারিয়ে যাবে। এর ফলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উপকূলবর্তী জেলা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশকিছু জেলাতে।
এর আগে রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি চালিয়েছিল 'ইয়াস'। এখনও অনেক নদীর বাঁধ মেরামত হয়নি। ফলে সুন্দরবন এবং পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকাগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রশাসনিক কর্তারা। আবহবিদরা জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছাতে পৌঁছাতে এই ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এর ফলে ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি ভারী বৃষ্টি হবে। শনিবার সকাল থেকেই দিঘা-সহ বিভিন্ন উপকূলবর্তী এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। ক্রমেই বাড়ছে বৃষ্টির দাপট।
আজ অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দেওয়া হয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। অন্যদিকে, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া ও হুগলি জেলায় ভারী বৃষ্টির সর্তকতা জারি করা হয়েছে। এছাড়াও, দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। রবিবার থেকে বৃষ্টি বাড়বে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ এবং পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে। বাঁকুড়া, বীরভূম ,পুরুলিয়া জেলাতে ভারী বৃষ্টির সর্তকতা আছে রবিবার। মালদহে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে 'জাওয়াদ'-এর ফলে। মঙ্গলবার হালকা বৃষ্টি হতে পারে পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়া জেলায়।
ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলা করার জন্য ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে উপকূলে এনডিআরএফ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মোট ৪৬ টি দল রয়েছে এনডিআরএফের। আটটি দল মোতায়েন আছে পশ্চিমবঙ্গে। এদিকে, উপকূলবর্তী এলাকার মানুষদের নিরাপদে সরে আসার জন্য ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করেছে প্রশাসন। মাইকিং করে প্রচার চালানো হয়েছে। সেইসঙ্গে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।