গতকাল রাতে প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে নামখানার মৌসুনি দ্বীপে গাছ ভেঙে বাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৮০ বছর বয়সী রেনুকা মণ্ডলের। রাত আটটা নাগাদ বাড়ির পাশের টিনের ছাউনি দেওয়া মাটির রান্নাঘরে বসেছিলেন বৃদ্ধা। সেই সময় আচমকা পাশের একটি গাছ ভেঙে রান্নাঘরের উপরে পড়ে গেলে তিনি চাপা পড়ে যান। তড়িঘড়ি পরিবারের লোকজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে, পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি থানার কোনার পাড়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ছিড়ে পড়া ইলেকট্রিক তারের সংস্পর্শে এসে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে একই পরিবারের দুই সদস্যের। মৃতদের নাম তরুণ সিং (৩০) ও ফরে সিং (৬৪)। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে বাড়ি থেকে কাজে যাওয়ার পথে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ছিড়ে পড়া ইলেকট্রিক তারের সংস্পর্শে আসেন তাঁরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁদের দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন। কলাগাছ কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ, মেমারিতে মৃত বাবা ও ছেলে
এই দুই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এলাকাগুলিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ও প্রশাসন দ্রুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করছে। ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত এলাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা দ্রুততার সঙ্গে কাজ করে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন এবং বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা গাছ ও তার সরানোর কাজ করছেন।
রবিরার রাতে ঝড়ের সময় এন্টালির বিবির বাগানে বাড়ির কার্নিশের চাঙড় ভেঙে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির।ক্যামাক স্ট্রিটেও ভেঙে পড়ে বাড়ির একাংশ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন। কবে বর্ষা ঢুকছে ভারতে? ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যেই জানাল IMD, বাংলায় তাহলে কোনদিন আসবে?
সোমবার দুপুরের পর থেকে কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনা, বিশেষত সুন্দরবনে আবহাওয়ার কিছু হলেও উন্নতি হয়েছে। তবে রেমাল যেহেতু পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের প্রায় সীমান্ত দিয়ে এগোবে, তাই নদীয়া, মুর্শিদাবাদে জোর বৃষ্টির সম্ভাবনা অন্তত আজ সন্ধ্যার পর্যন্ত। তারপর উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি বাড়তে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন। সাত সকালে পথে রাজ্যপাল, টাস্ক ফোর্স নিয়ে ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন