শুক্রবার রাজ্যে করোনার প্রতিষেধক দেওয়ার মহড়া পর্ব চলল। করোনার প্রতিষেধক দেওয়ার সময়ে কী কী করতে হবে, কী কী সমস্যা হতে পারে, তা হাতেকলমে আগাম বুঝে নিতেই এই ‘ড্রাই রান’। এবার বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ধরে নেওয়া হচ্ছে ওইদিনই সিদ্ধান্ত হবে টিকাকরণের চূড়ান্ত দিনক্ষণের।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘মহড়া সফল হয়েছে। ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত। আগামী সপ্তাহে প্রতিষেধক রাজ্যে চলে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।’ শহরের এসএসকেএম হাসপাতালে মহড়া দেখতে হাজির ছিলেন তিনি। ওই হাসপাতালে চারটি এবং শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে দুটি কেন্দ্র ছিল। গোটা রাজ্যে জেলা হাসপাতাল, মহকুমা হাসপাতাল, আর্বান প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, গ্রামীণ হাসপাতাল মিলিয়ে মোট ৮১টি জায়গা ও শহরের প্রায় সব মেডিক্যাল কলেজেই চলল ‘ড্রাই রান’। এখন দেখার এই টিকা দিয়ে করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে কতটা লড়াই করা যায়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, প্রতিষেধক দেওয়া যখন শুরু হবে, তখন প্রতিটি হাসপাতালের এক–একটি কেন্দ্রে দৈনিক ১০০ জন করে গ্রহীতাকে প্রতিষেধক দেওয়া হবে। ২৫ জন করে গ্রহীতাকে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। শুক্রবারের মহড়ায় দেখা গিয়েছে, পরিচয়পত্র ও নথি দেখিয়ে প্রতিষেধক কেন্দ্রে প্রবেশ থেকে ভ্যাকসিন নেওয়া এবং তার পরে আধ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ ঘরে থাকা— সব মিলিয়ে গোটা প্রক্রিয়ায় সময় লাগছে ৪০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রথমসারির করোনা যোদ্ধা হিসেবে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাই প্রথম ধাপে প্রতিষেধক পাবেন। প্রতি জেলায় নাম নথিভুক্ত হয়েছে। সেই তালিকা থেকে বাছাই করা স্বেচ্ছাসেবক স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে ২৫ জনকে নিয়েই মহড়া চলে। প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা ধাপে ধাপে সব দেখে নিয়েছেন। ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ হাতে ছোঁয়ানো পর্যন্ত সবটাই হয়েছে।
হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামে নির্বিঘ্নেই মিটেছে টিকাকরণের মহড়া। এমনকী পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমান, বীরভূম, নদিয়ায় স্বাস্থ্যজেলা ভিত্তিক কেন্দ্র করে মহড়া চলে। রাজ্যে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে ৬ লক্ষ স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীকে দু’টি করে ডোজ় দেওয়ার কথা।