একেবারে রকেট গতিতে উত্থান বললেও খুব কম বলা হয়। জীবনের প্রথম পর্বে ছিলেন মাছ ব্যবসায়ী। জমি কেনা তো দূরের কথা, সংসার কীভাবে চালাবেন সেই আয়টাও করতে পারতেন না অনুব্রত। আর গত কয়েকবছরে সেই অনুব্রতর আয়ের অঙ্ক শুনে বড় বড় শিল্পপতিরাও কার্যত ভিমড়ি খেতে পারেন। সূত্রের খবর, দাম যাই হোক, কার্যত বাজার থেকে মাছ কেনার মতো করে ধানকল, চালকল, জমিজমা কিনে ফেলতেন কেষ্ট মণ্ডল।
আর সিবিআইয়ের কাছে সেই অনুব্রত মণ্ডলের যে আয়ের অঙ্ক উঠে আসছে তা দেশের অন্যতম ধনীরাও কার্যত কল্পনা করতে পারবেন না। সূত্রের খবর, কেষ্ট মণ্ডলের দৈনিক আয় ছিল প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। তবে দান ধ্যানও করতেন তিনি। বাকিটা এক বিধায়ক ও দেহরক্ষীর মাধ্যমে তৈরি হত তহবিল। পরে কাদের কাছে যেত টাকা, খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা।
একটি বাংলা সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুসারে, গরু, কয়লা পাচার, বেআইনী বালি, পাথর খাদানের অবৈধ আয় এসে জমা হত অনুব্রত মণ্ডলের কাছে। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন, সেই টাকার উৎস সম্পর্কে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কিছুই জানতেন না? বছরের পর বছর ধরে অবৈধ পথে আয় করলেন দলের জেলা সভাপতি আর তা ঘুণাক্ষরেও টের পেলেন না দলীয় নেতৃত্ব?
সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডলের অগোচরে গরু পাচার হওয়ার উপায় ছিল না। গরু পিছু আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা কমিশন ধার্য করা হয়েছিল। কয়লার গাড়ি থেকে দিতে হত হাজার দশেক টাকা। ২৭টি থানা এলাকার উপর দিয়ে হত গরু পাচার। আর সেই পাচারের জন্য থানা পিছু নির্দিষ্ট কমিশনও দেওয়া হত বলে বিভিন্ন মহলের তরফে দাবি করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ সীমান্তের দুটি থানাকে অন্তত এক কোটি টাকা মাসিক কমিশন দিতে হত বলে অভিযোগ। বাকিদের জন্য বরাদ্দ থাকত ৬০-৭০ লক্ষ টাকা। আর সবটাই হত তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের নিয়ন্ত্রণে। এতটাই দাপট তাঁর। সেই পুলিশকেই বোম মারার হুমকি দিয়েছিলেন অনুব্রত। তবে কি মাসিক নজরানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কাতেই পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিত না?