জলপাইগুড়ির লাটাগুড়ির জঙ্গলঘেরা রাস্তা। সন্ধ্যায় সেই রাস্তা দিয়েই ফিরছিল পর্যটকবোঝাই একটি গাড়়ি। মহাকালের কাছেই আচমকাই গাড়ির সামনে আবছায়া একটা মুর্তি। সাদা থান পরে এক মহিলা। বনেটের উপর লাফিয়ে উঠে পড়ার চেষ্টা শুরু করে দেয় ওই মহিলা। জঙ্গলের রাস্তায় আবছায়ার মধ্যে ওরকম সাদা থানা পরা কাউকে একঝলক দেখলে মনে হতেই পারে অশরীরি কোনও আত্মা। লাটাগুড়ির রাস্তায় ভূতের নানা কথাও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। পর্যটকদেরও প্রাথমিকভাবে তেমনটাই মনে হয়েছিল। পরে অবশ্য গাড়ি থেকে নেমে ওই ‘ভূতকে’ জাপটে ধরে ফেলেন এক মহিলা পর্যটক। দেখা যায়, কোনও ভূত বা প্রেতাত্মা নন। রক্তমাংসের একজন মহিলা। সাদা থান পরে নাচানাচি করছেন জঙ্গলের রাস্তায়। কিন্তু কেন?
একটু চেপে ধরতেই মহিলা জানিয়ে দেন, তিনি ভূত বা পেত্নী নন। তাঁকে ভূত সাজিয়ে পাঠানো হয়েছে। তাঁর সঙ্গে আরও আট জন রয়েছে বলেও তিনি জানান। এদিকে পর্যটকরাও খেয়াল করেন, ওই মহিলা ধরা পড়তেই জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে থাকা কয়েকজন যে যেদিকে পারে পালায়। তবে তাদেরকে ধরা যায়নি। এরপর ক্রান্তি থানায় খবর দেওয়া হয়। সাদা থান পরা ওই মহিলাকে আটক করেছে মেটেলি থানার পুলিশ।
এরপরই আসল ঘটনা ফাঁস হতে থাকে ক্রমশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে গোটাটাই ছিনতাইবাজদের একটা চক্র। জঙ্গলের গা ছমছমে রাস্তায় পর্যটকদের ভূত পেত্নির ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করার ছক। ওই মহিলাকে ভূত, পেত্নি সাজিয়ে পাঠানো হয়। এরপর পর্যটকরা ভয় পেলেই ছিনতাইবাজদের অপারেশ শুরু হয়। কিন্তু পর্যটকদের সাহসিকায় সেই ছক ভেস্তে যায় এদিন। পুলিশ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের খুঁজছে।