প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন বিনয় তামাং। পাহাড়ের রাজনীতিতে নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা ঘাসফুল শিবিরে। দার্জিলিং পুরসভা যখন হামরো পার্টির হাতছাড়া হয়ে অনীত থাপার দখলে যাচ্ছে সেদিনই তৃণমূল শিবিরের সঙ্গে বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করলেন খোদ বিনয় তামাং। ঘাসফুল শিবিরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। পাহাড়ের রাজনীতিতে নিঃসন্দেহে বড় সমীকরণের ইঙ্গিত দিলেন বিনয়।
সূত্রের খবর, অনীত থাপার দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা হামরো পার্টিকে কার্যত কৌশলে সরিয়ে দার্জিলিং পুরসভা দখলের চেষ্টা করেছে। সেদিনই বিপর্যয়ে তৃণমূলে। এদিকে পাহাড়ের রাজনীতিতে অনীত বনাম বিনয়ের লড়াই সুবিদিত। আর এবার কার্যত অনীত থাপার পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তৃণমূল ছাড়ার কথাই ঘোষণা করে দিলেন বিনয় তামাং। তার সঙ্গেই বিস্ফোরক দাবি করেছেন তিনি। এমনকী প্রয়োজনে রক্ত ঝড়়ানোর ইঙ্গিতও দিয়েছেন বিনয় তামাং।
তিনি বিবৃতিতে লিখেছেন, পাহাড়ে গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। যেভাবে দার্জিলিং পুরসভার হাতবদল হয়েছে তা ঐক্য ও সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত। এর সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তিনি অনুরোধ করেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপনি পদক্ষেপ নিন।
কিন্তু কী এমন হল যে তৃণমূলের সঙ্গে এভাবে সম্পর্ক ত্যাগ করলেন প্রাক্তন জিটিএ প্রধান তথা পাহাড়ের তৃণমূলের অন্য়তম ভরসা বিনয় তামাং?
আসলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বুধবারই আস্থা ভোটে দার্জিলিং পুরসভার দখল নিতে চলেছে অনীত থাপার দল। হামরো পার্টিকে সরিয়ে তাঁরাই এখন দার্জিলিং পুরসভার ক্ষমতা দখল করছে।আস্থা ভোটে যোগ দেননি হামরো পার্টি ও বিমল গুরুংয়ের ১৫জন কাউন্সিলর। সব মিলিয়ে পুরসভা এখন অনীত থাপাদের দিকে। অন্যদিকে অনীত আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুডবুকে রয়েছেন বলে খবর। সব মিলিয়ে অনীতের বাড়বাড়ন্তে বেজায় চটেছেন বিনয় তামাং। তারই পরিণতিতে একেবারে তৃণমূলের সঙ্গে সংসর্গ ত্য়াগ করার কথা ঘোষণা করলেন তিনি।
পাহাড়ে তৃণমূল অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ নিচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। গত বছর তিনি মোর্চা ছেড়ে তৃণমূলে এসেছিলেন। বছর ঘুরতেই তিনি তৃণমূল ছাড়লেন। এবার প্রশ্ন তবে কি এবার তাঁরই পুরানো নেতা বিমল গুরুংয়ের হাত ধরবেন বিনয় তামাং? অনীতকে টাইট দিতে এছাড়া আর কি কোনও পথ আছে বিনয়ের কাছে?
বিনয় জানিয়েছেন, আজ থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছি। দার্জিলিংয়ের গণতন্ত্র বিপন্ন। পাহাড়, তরাই, ডুয়ার্সে শান্তি ফেরাতে রক্ত ঝড়াতেও তৈরি আছি। পাহাড়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে সরব বিনয় তামাং।
এদিকে এর আগে একই সুর শোনা গিয়েছিল মোর্চা নেতা বিমল গুরুং ও হামরো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ডের গলাতেও। তবে কি পাহাড়ের রাজনীতিতে এবার আড়াআড়ি বিভাজন হয়ে যাচ্ছে? এবার প্রশ্ন বিজেপি এবার পাহাড়ে কী অবস্থান নেবে সেটাই দেখার।