পশ্চিমবঙ্গ সরকার পর্যটনে ছাড় দিলেও কার্যক্ষেত্রে পাহাড়ে এই সময়ে কেউ পা রাখবেন কি না, তা নিয়ে ঘোরতর সন্দেহ দেখা দিয়েছে দার্জিলিং-কালিম্পঙের হোটেল ব্যবসায়ীদের।
বুধবার থেকে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে পর্যটন চালু করল রাজ্য প্রশাসন। দার্জিলিং ও কালিম্পঙে হোটেল খোলার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)। কিন্তু তাতে বিন্দুমাত্র আশার আলো দেখছেন না পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
দার্জিলিঙের লিটল টিবেট ও সেভেন সেভেন্টিন হোটেলের মালিক তাশি ফেনজো যেমন জানাচ্ছেন, ‘একদিন লকডাউন উঠে যাবেই এবং আমাদের প্রশাসনিক নির্দেশ মানতেও হবে, কারণ এটাই আমার রুটি-রুজি। কিন্তু আমরা খুব বেশি আশাবাদী নই। আমার হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলি খোলা রয়েছে, কিন্তু কখনও কখনও সারাদিনে একজন খদ্দেরও আসেন না।’
বর্ষার আগমনের সঙ্গেই পাহাড়ে পর্যটন মরশুমে দাঁড়ি পড়ে যায়। এর পর মরশুম বলতে পুজো আর শীতের ছুটি। কিন্তু অক্টোবরেও অন্যান্য বছরের ১০% বুকিংও পাবেন বলে মনে করছেন না তাশি।
ইতিমধ্যে দার্জিলিঙের হোটেল মালিক সংগঠনকে (DHOA)পর্যটন সংক্রান্ত কোভিড নিষেধাজ্ঞা জানিয়ে দিয়েছে জিটিএ। পর্যটকদের স্যানিটাইজেশমন পদ্ধতি ও সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়।
এর আগে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে তৈরি বলে ঘোষণা করেছিল কালিম্পঙের হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু অধিকাংশ হোটেল ও গেস্টহাউজ কর্তৃপক্ষই তাতে সহমত হচ্ছেন না। করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় বহিরাগত পর্যটকদের জন্য দরজা খুলে দিতে অন্তত অগস্ট মাসের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান পাহাড়ি শহরের হোটেল ও গেস্টহাউস মালিকরা।
একই ভাবে কালিম্পং থেকে ২৪ কিমি দূরে জনপ্রিয় পর্যটনস্থল সিলেরি গাঁওয়ের হোমস্টে মালিকরা ঠিক করেছেন, কোভিড টিকা বাজারে না আসা পর্যন্ত তাঁরা কোনও পর্যটককে স্বাগত জানাবেন না।

অন্য দিকে, এ দিনই খুলে গিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের জনপ্রিয় সৈকতাবাস দীঘা, শংকরপুর, মন্দারমণি ও তাজপুরের প্রায় ৬০০ হোটেল। সমুদ্রে স্নান করার উপরে নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও বিচের উপরে পিকনিক-সহ অন্যান্য জনসমাগম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। হোটেল ও রিসর্টে মেনে চলতে হবে কড়া স্যানিটাইজেশন ও সামাজিক দূরত্ব বিধি।
তবে হোটেল খুললেও পর্যটকদের থেকে বিশেষ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দীঘা হোটেল মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিপ্রদাস চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, ‘জুন থেকেই প্রায় ২০০ হোটেল চালু হয়ে গিয়েছে, কিন্তু ব্যবসা অতি সামান্যই হচ্ছে।’
দীঘা শংকরপুর উন্নয়ন পরিষদের (DSDA) চেয়ারম্যান শিশির অধিকারী জানিয়েছেন, ‘লকডাউনের পরে দীঘা আগের চেয়েও অনেক বেশি পরিচ্ছন্ন, দূষণমুক্ত ও স্বাস্থ্যকর হয়েছে। পর্যটকরা এখানে নির্দ্বিধায় আসতে পারেন। কিন্তু সংক্রমণ এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় বিধি মেনে চলতে হবে।’