গত কয়েকমাসে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে দার্জিলিংয়ে। আর তা হল পাহাড়ে গিয়ে মৃত্যু কলকাতার পর্যটকদের। কখনও সান্দাকফু, কখনও ধোত্রেতে প্রাণ হারিয়েছেন বাংলার পর্যটকরা। এবার আবার দার্জিলিংয়ে গিয়ে প্রাণ হারালেন কলকাতার আর এক পর্যটক। এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ প্রথমবার সপরিবারে দার্জিলিং ভ্রমণে গিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। আর সেখানেই যে এমন ঘটনা ঘটবে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। আনন্দের সফর যেন অভিশপ্ত হয়ে উঠল। কান্নায় পাহাড়ের বুকেই ভেঙে পড়ল গোটা পরিবার।
এদিকে দার্জিলিং সফরে গিয়ে যিনি মারা গেলেন তাঁর নাম অমিয়নাথ ঘোষ। কিন্তু এই সফর এভাবে অভিশপ্ত হয়ে উঠবে সেটা কেউ দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি। বেড়াতে এসে প্রথম দিনেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়লেন অমিয়নাথ ঘোষ। তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। প্রবল ঠান্ডায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে অমিয়নাথ ঘোষের। এই কথাই জানান তাঁর বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যরা। বেড়াতে যাওয়াই যেন কাল হল। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে ভাল সময় কাটাচ্ছিলেন অমিয়বাবু। হঠাৎই ছন্দপতন। গোটা ঘটনায় ঘোষ পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। অমিয়নাথ ঘোষ গত ২৯ জানুয়ারি পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে এসেছিলেন পাহাড়ে।
আরও পড়ুন: উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ নিল বড় সিদ্ধান্ত, চাপে পড়লেন অভিভাবক–সিভিক ভলান্টিয়ার
অন্যদিকে তিনটি পরিবার মিলে দার্জিলিংয়ে বেড়াতে এসেছিলেন। তাঁরা মোট ৯ জন সদস্য ছিলেন। তাঁদেরই একজন অমিয়বাবুর বন্ধু রূপম সরকার জানান, প্রথমে তাঁরা কালিম্পং ঘুরে আসেন। তারপর সেখান থেকে দার্জিলিং যান। সারাদিন ম্যাল–সহ দার্জিলিংয়ের নানা জায়গায় পাহাড়ের নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করেন। রাতে হোটেলে ফিরে খাওয়াদাওয়া করে ঘুমাতে যান সকলে। আর রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটে যায় দুর্ঘটনা। অমিয়বাবুর বন্ধুরা হোটেল রুম থেকে কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পান। তা শুনেই তাঁরা ছুটে গিয়ে দেখেন অমিয়নাথ ঘোষ মেঝেতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন।
এছাড়া এই পরিস্থিতিতে স্বভাবিকভাবেই সকলে ভেঙে পড়েছেন। একজনকে হারিয়ে সফর কাটছাঁট করে ফিরছেন তাঁরা। অমিয়বাবুকে উদ্ধার করে দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহ ময়নাতদন্ত করার জন্য পাঠানো হয়েছে। অমিয়নাথবাবুর স্ত্রী জানান, উনি দীর্ঘদিন হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। একবার অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। পরিবারের আরও সদস্য কলকাতা থেকে দার্জিলিংয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের হাতে মৃতদেহ তুলে দেওয়া হবে। সম্প্রতি ধোত্রে গিয়ে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় এক পর্যটকের। সান্দাকফুতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল দমদমের আর এক যুবতীর। এবার অমিয়নাথ ঘোষ। অমিয়বাবু বন্ধু রূপমবাবু বলেন, ‘সবাই তখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ একটা শব্দ শুনতে পাই। আমি উঠে ওদের ঘরে গিয়ে দেখি, অমিয় ছটফট করছে। ওর স্ত্রী, মেয়ে চিন্তা করছে। আমি হোটেলের রিসেপশনে ফোন করে গাড়ি চাই। ওরা গাড়ির ব্যবস্থা করতেই হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু বাঁচানো যায়নি।’