এবার সত্যিকারের ‘জুরাসিক পার্ক’ দেখা দিতে চলেছে শৈলশহরে। পর্যটকদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। এখানে ডায়নোসার–কে পুনরুজ্জীবিত করা হচ্ছে না। বরং পর্যটকদের জন্য এবার সুখবর রয়েছে। এখানে এখন রেড পান্ডা থেকে শুরু করে স্নো লেপার্ড দেখতে পাওয়া যাবে। আর অতীতের বিষয়গুলি যাতে অনুভূত হয় সেই ব্যবস্থাও থাকবে। দার্জিলিংয়ে এবার ‘বরফের চিড়িয়াখানা’ গড়ে উঠতে চলেছে। এটা গোটা দেশের মধ্যে প্রথম। সারাবছর পর্যটকরা দার্জিলিংয়ে এসে থাকেন। নানা বিষয় দেখে থাকেন। কিন্তু এবার নতুনত্ব দেখতে পাবেন।
এদিকে পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্ক যেটা দার্জিলিংয়ে অবস্থিত সেটা দেশের মধ্যে প্রথম ‘বরফের চিড়িয়াখানা’ হচ্ছে। যেখানে সংরক্ষিত থাকবে হিমালয়ান বন্যজন্তুর ডিএনএ। স্টিলের ট্যাঙ্কে তরল নাইট্রোজেনে ১৯৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে ডুবিয়ে রাখা হবে। এই গোটা প্রক্রিয়াটি হচ্ছে যৌথ উদ্যোগে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এবং দক্ষিণ রাজ্য হায়দরাবাদে অবস্থিত সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজির যৌথ উদ্যোগে তা হতে চলেছে। ক্রায়োজেনিক সংরক্ষণের উদ্যোগই লক্ষ্য। তাই এভাবে গোটা বিষয়টি করা হলে বন্য পশুদের জেনেটিক ব্লুপ্রিন্ট একইরকম থাকে।
আরও পড়ুন: ‘বেআইনিভাবে জমি দখল বরদাস্ত করা হবে না’, বিধানসভায় শঙ্করকে জবাব ফিরহাদের
অন্যদিকে ইতিমধ্যেই যেসব পর্যটক দার্জিলিং ঘুরে এসেছেন তাঁরা চিড়িয়াখানা দেখে এসেছেন। এবার গেলে নতুন রূপে তা দেখতে পাবেন। ‘বরফের চিড়িয়াখানা’ এখনও পর্যন্ত পর্যটকরা দেখেননি। এই বিষয়ে বাংলার চিফ ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন দেবল রায় বলেন, ‘এটা একটা প্রচেষ্টা ডিএনএ সংরক্ষণ করার। আমরা বন্য পশুদের নমুনা সংগ্রহ করছি। যদি কোনও জন্তু স্বাভাবিকভাবে মারা যায় বা অকালমৃত্যু ঘটে তাহলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাদের নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলিকে এভাবে সংরক্ষণ করা হবে।’ এই চিড়িয়াখানা দেশের সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থিত। তাই এখানে প্রজনন সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।
এছাড়া ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দার্জিলিংয়ে বায়ো ব্যাঙ্কিংয়ের প্রচেষ্টা করা হয়। এখানে বিজ্ঞানীরা সংগ্রহ করেছিলেন এবং সংরক্ষণ করেন জেনেটিক সামগ্রী। রেড পান্ডা, হিমালয়ান কালো ভাল্লুক, স্নো লেপার্ড–সহ নানা জন্তুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। চিড়িয়াখানার অধিকর্তা বাসবরাজ হোলেয়াচির বক্তব্য, ‘আমরা চিড়িয়াখানার ভিতরে গড়ে তুলেছি পরীক্ষাগার যেখানে এই ডিএনএগুলি থাকবে। এই বরফের চিড়িয়াখানায় থাকবে অপরিবর্তনশীল জেনেটিক সামগ্রী। যা দিয়ে নানা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা যায়। এখানে ক্রমাগত তরল নাইট্রোজেন সরবরাহ করা হবে।’