বর্ষা দাপট দেখাতে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গে। তার জেরে স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নাগাড়ে বৃষ্টি হওয়ার দরুণ বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের সব জেলা। প্রবল বৃষ্টিতে ফুঁসতে শুরু করেছে উত্তরের সব নদীগুলিই। আর এমন আবহে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গ জেলাজুড়ে। এই আবহাওয়া যদি আরও কদিন থাকে তাহলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে। এই অবস্থাতেই এখন কালিম্পংয়ের তিস্তা বাজারে তিস্তা সেতুর উপর দিয়ে বইছে জল। তার জেরে দার্জিলিং–কালিম্পং রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এমনকী সড়কপথ কার্যত বিচ্ছিন্ন দার্জিলিং–কালিম্পংয়ে।
ভুটানের জলও নেমে আসে বাংলায়। তার জেরে প্লাবিত হয় উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি। এই নিয়ে নীতি আয়োগের বৈঠকে জোর সওয়াল করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইন্দো–ভুটান কমিশন গঠন করার প্রস্তাব দেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। বন্যা পরিস্থিতি ঠেকাতে উত্তরবঙ্গ নিয়ে ভাবছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী দু’দিন (সোমবার–মঙ্গলবার) বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি থাকবে উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায়। বজ্রবিদ্যুৎ–সহ বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। শনিবার থেকে নাগাড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। যা চলছে রবিবারও। সোমবার বৃষ্টি বাড়বে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলাতে। আজ, রবিবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে।
আরও পড়ুন: ‘ফরাক্কা চুক্তি রিনিউ করলেন কিন্তু আমাদের জানালেন না’, ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা
আজ যে বৃষ্টি হচ্ছে সেটার থেকে আগামীকাল সোমবার আরও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলাতে এমনই পূর্বাভাস আছে। তবে নিম্নচাপ সরে গেলে সোমবারের পর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে উত্তরবঙ্গে বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর। আগেও টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়েছে উত্তরবঙ্গের একাধিক এলাকা। সেখানে ধস নেমে রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। প্লাবিত হয়ে পড়েছিল একাধিক গ্রাম। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। কার্শিয়ংয়ের পাগলাঝোরাতে বন্ধ হয়েছিল ১১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এবার বৃষ্টি বাড়লে পার্বত্য এলাকায় ধসের পরিমাণও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে যতটুকু জানা গিয়েছে তাতে সক্রিয় মৌসুমী অক্ষরেখা বাংলা থেকে ওড়িশা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। রাজস্থান থেকে বাংলার উপর দিয়ে বিস্তৃত হয়েছে আর একটি মৌসুমী অক্ষরেক্ষা বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। এই জোড়া অক্ষরেখার প্রভাবে সোমবার থেকে দক্ষিণবঙ্গেও বৃষ্টি বাড়বে। বুধবার এবং বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। তাই আগামী ২৪ ঘণ্টা মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকছে। সোমবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলায়।