পুজোর মুখে বাংলার মুকুটে নয়া পালক। রেড পান্ডা সংরক্ষণ ও প্রজননে বিশ্বের সেরা তিনের তালিকায় জায়গা করে নিল দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্ক। উল্লেখ্য, শুধু বাংলাতেই নয়, ভারতের মধ্যে এই প্রথম কোনও চিড়িয়াখানা প্রথমবারের মতো সংরক্ষণ-প্রজননের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে চলেছে। ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন অফ চিড়িয়াখানা এন্ড অ্যাকোয়ারিয়ামের (ওয়াজা) সরক্ষণের তালিকায় প্রথম তিনে জায়গা করে নিয়েছে দার্জিলিংয়ের এই চিড়িয়াখানা। তাতে বেজায় খুশি হয়েছেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।
আরও পড়ুন: এবার সুখবর দার্জিলিং চিড়িয়াখানায়, দু’টি স্নো লেপার্ড চারটি লালপান্ডা শাবকের জন্ম
পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্ক দার্জিলিং চিড়িয়াখানা নামেও পরিচিত। আগামী ৭ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে তারাঙ্গো চিড়িয়াখানায় ৭৯ তম ওয়াজা বার্ষিক সম্মেলনে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। এই খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বনমন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য দারুণ খবর। এটা আমাদের সংরক্ষণ প্রচেষ্টার একটি স্বীকৃতি। এটি শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই নয়, দেশের বিভিন্ন অংশে সংরক্ষণ কর্মসূচিকে জোরদার করতে উৎসাহিত করবে।’
উল্লেখ্য, দার্জিলিংয়ের এই চিড়িয়াখানায় বিলুপ্ত প্রায় রেড পান্ডা সংরক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় জঙ্গল থেকে ৪ টি লাল পান্ডা এনে প্রজনন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল। সেই থেকে ২০২২ সালের মধ্যে রেড পান্ডার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ৯ টি রেড পান্ডা পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানে ছেড়ে দেওয়া হয়। বন্য অঞ্চলে পাঁচটি শাবকের জন্ম হয়েছিল ।বর্তমানে এই চিড়িয়াখানায় উল্লেখযোগ্যভাবে রেড পান্ডা বেড়েছে। ৪টি পুরুষ, ১১টি মেয়ে পান্ডা এবং চারটি শাবক রয়েছে। এছাড়াও, কিছু রেড পান্ডা ভারত ও বিদেশের অন্যান্য চিড়িয়াখানায় দেওয়া হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, রেড পান্ডার জন্য সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যান এবং দার্জিলিং বিভাগে বেশ কিছু বাসস্থান পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ এবং ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলি রেড পান্ডা সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি অভ্যন্তরীণ এবং সহযোগিতামূলক গবেষণার কাজ করছে। যারফলে রেড পান্ডার সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন বনবিভাগের কে আধিকারিক। এছাড়াও, বায়োব্যাঙ্কিং এবং জেনেটিক রিসোর্স সুবিধার মাধ্যমে সংরক্ষণ প্রচেষ্টাযে আরও জোরদার করা হয়েছে। তাছাড়া, লাল পান্ডা এবং অন্যান্য বিপন্ন প্রজাতির ডিএনএ ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই বন আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক বাসভবনে রেড পান্ডাদের দীর্ঘমেয়াদী সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সংরক্ষণের জন্য ভবিষ্যতে আরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।