হাওড়ার পর পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে একের পর এক মৃত্যু হয়েছে হনুমানের। গত ২ দিনে সেখানে ১০টি হনুমানের দেহ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। যারমধ্যে ৮টি দেহ উদ্ধার করেছে কাটোয়া বন দফতর। কীভাবে এতগুলি হনুমানের মৃত্যু হয়েছে? তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিষয়টি সামনে আসতেই তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এলাকাবাসীদের একাংশের মধ্যে। তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন পশুপ্রেমীরা।
আরও পড়ুন: একাধিক হনুমানকে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ, জগৎবল্লভপুরের ঘটনায় আলোড়ন
জানা যাচ্ছে, গত দুদিন ধরে কেতুগ্রামের শাঁখাই, এনায়েতপুর, উদ্ধারণপুর জুড়ে হনুমানের মৃতদেহগুলি উদ্ধার হয়েছে। অনেকে সন্দেহ করছেন কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। কী কারণে হনুমানগুলির মৃত্যু হয়েছে তা জানতে ইতিমধ্যেই দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে বিষাক্ত খাবার খাওয়ার ফলেই হনুমানগুলির মৃত্যু হয়েছে।
এবিষয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার ডিএফও সঞ্চিতা শর্মা জানান, হনুমানগুলির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে শনিবার বিকেলে কেতুগ্রামের শাঁখাই, এনায়েতপুর এবং উদ্ধারণপুর এলাকায় তিনটি হনুমান মারা যায়। রবিবার সেই এলাকাগুলিতে আরও পাঁচটি হনুমান মারা যায়। বন দফতর গিয়ে আটটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে বনকর্মীরা সেখান থেকে চলে গেলে আরও দু’টি হনুমানের মৃতদেহ দেখতে পান এলাকাবাসীরা। এরমধ্যে একটি হনুমানের রক্তাক্ত দেহ জঙ্গলের ভিতর থেকে পাওয়া যায়। তার কারণ, ওই হনুমানের দেহ খুবলে খেয়েছিল শিয়াল, কুকুরে। পরে বন বিভাগকে এনিয়ে খবর দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, বিষক্রিয়ার ফলে হনুমানগুলির মৃত্যু হয়েছে। তবে কোথায় হনুমানগুলি বিষ খেলো তা জানতে তদন্তের দাবি জানান তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেতুগ্রাম-২ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর সংখ্যক হনুমানের দল রয়েছে। প্রতিটি দলে মোটামুটি ২০ থেকে ২৫টি করে হনুমান রয়েছে। স্থানীয়দের অনেকের ধারণা সর্ষে, আলুচাষ বা অন্যান্য শীতকালীন সবজির চাষের জন্য অনেকেই জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করেন। সেই ফসল খেয়েই বিষক্রিয়ায় মারা যেতে পারে হনুমানের দল। আবার অনেকেই প্রশ্ন তুলেছে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বিষ মিশিয়ে দিতে পারে। তাই অবিলম্বে এবিষয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।