এক মুহূর্ত মেয়েকে চোখের আড়াল করত না বাবা। মেয়েও পরম যত্নে আগলে রাখতেন বাবাকে। বাবা শেখ নাজির আলি। আর মেয়ে মুসকান আলি। বৃহস্পতিবার মারা যান ক্যানসারে আক্রান্ত ৫৮ বছর বয়সী বাবা শেখ নাজির আলি। সেই শোক সামলাতে পারলেন না ২৬ বছর বয়সী মেয়ে মুসকান। বাবা দেহের সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। এরপর সেখানেই নিথর হয়ে যায় মেয়ে মুসকানের দেহ। বাবা ও মেয়ের এই মৃত্য়ু দেখে শোকে পাথর বাসিন্দারাও।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে শেখ নাজির আলির পুত্র শেখ মইনুদ্দিন ২০০৯ সালে ডিভিসির জলে স্নান করতে নেমে তলিয়ে মারা যান। এরপর মা, বাবাকে আরও আগলে রাখতেন মুসকান। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিলেন তিনি। এমএ পাশ করার পর বিএডও করেছিলেন তিনি। এদিকে পরিবার সূত্রে খবর, নাজিরের ক্যানসার ধরা পড়ার পর প্রথমে চেন্নাই ও পরে কলকাতায় চিকিৎসা হয় তাঁর। এদিকে বৃহস্পতিবার বাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। গলসির পুরসা ব্লক প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এরপর রাতেই মৃতদেহ নিয়ে আসা হয় বাড়িতে।
বাড়ির দোতলার ঘরে বাবার দেহর সামনেই কান্নাকাটি করছিলেন মেয়ে মুসকান। বুকফাটা হাহাকার। তীব্র পিতৃশোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তিনি। এরপর আচমকা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মেয়ে মুসকান। একই দিনে মৃত্যু বাবা ও মেয়ের। একেবারে দিশেহারা অবস্থা মা পূর্ণিমা আলির। শুক্রবার ছোটমুড়িয়া গ্রামে কবরস্থ করা হয় বাবা ও মেয়ের দেহ। এক তীব্র শূণ্যতা নেমে এসেছে পরিবারে। মা পূর্ণিমা আলি বলেন, ভাবতেই পারিনি একই দিনে চলে যাবে দুজনেই। এই শোক সামলাব কী করে?