সাইক্লোন আমফানের ফলে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৮৬। এদিন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির অন্যতম, কলকাতা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সরজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত শুধু গাছ পড়েই মারা গিয়েছেন ২৭ জন। তড়িতাহাত হয় মৃত্যু হয়েছে ২২ জন। দেওয়াল ভেঙে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও বাড়ি ভেঙে, সাপের কামড়ে, জলে ডুবে, ল্যাম্পপোস্ট পড়ে মোট ১৬জন মারা গেছেন।
গতকাল প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে আকাশপথে উত্তর ২৪ পরগনার অবস্থা দেখেছিলেন মমতা। তারপর বসিরহাটে প্রশাসনিক বৈঠক হয় মোদী-মমতার। তারপর অগ্রিম হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা জানান মোদী। এদিন ফের বেরোচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবারই তিনি বলেন,'আগামিকাল আমি আবার নিজে দক্ষিণ ২৪ পরগণার পাথরপ্রতিমা, গোসাবা, বাসন্তী, নামখানা, কাকদ্বীপ ঘুরে দেখব। তারপর কাকদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠক করব।'
অন্যদিকে বিভিন্ন জায়গায় যে ভাবে গাছ ও ইলেকট্রিকের পোল পড়ে আছে, তাতে অত্যন্ত সমস্যা হচ্ছে উদ্ধারকাজ ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে। এই নিয়ে বাড়ছে অসন্তোষ। ৬০ ঘণ্টা কেটে গেলেও বহু জায়গায় নেই বিদ্যুত। নেই পানীয় জল।খোদ কলকাতাতেও তেমন অবস্থার কথা জানা যাচ্ছে। সিইএসই-র গাড়ি ধরে চলছে বিক্ষোভ।
এখনও পর্যন্ত রাজ্যে পাঁচ হাজারের ওপর ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। মোট ৬ লক্ষ মানুষকে সরানো হয়েছে। নামখানা থেকে অভিযোগ উঠছে যে ত্রিপলও পাওয়া যাচ্ছে না। উত্তর ২৪ পরগনায় খাদ্যের অভাব দেখা যাচ্ছে অনেক জায়গায়। সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা দ্রুত অফিসারদের আটকে পড়া মানুষকে সাহায্য করতে বলেছেন। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ায় প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ পাঠানো সমস্যা হচ্ছে। দক্ষিণে আট ও উত্তর ২৪ পরগনায় ২১ জন মারা গিয়েছেন আমফানে।
পরিস্থিতি একই রকম সঙ্গীন পূর্ব মেদিনিপুরের খেজুরি ও নন্দীগ্রামের মতো জায়গায়। হাওড়ায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তথৈবচ হাল হুগলি ও পূর্ব বর্ধমানেও। মমতা বলেছিলেন প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী এক লক্ষ কোটির ক্ষতি হয়েছে। তবে সমীক্ষা শেষেই এই সংখ্যা সঠিক করে বলা যাবে। কেন্দ্রও টিম পাঠাবে বলে জানিয়েছেন মোদী। শুধু পূর্ব বর্ধমানেই ছশো কোটির ক্ষতি বলে প্রশাসন জানাচ্ছে। তাই মোট ক্ষতি যে এক লক্ষ কোটিকে পেরিয়ে যাবে, তা বলাই যায়।