শ্রীভূমি থেকে লুমিনাস ক্লাব- মহালয়ায় ভিড় উপচে পড়ল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পুজো মণ্ডপে। উৎসবে ফিরলেন মানুষ। বিশেষত লেকটাউনের শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব এবং কল্যাণী আইটিআই মোড়ের লুমিনাস ক্লাবের মতো দুর্গাপুজোর মণ্ডপে যে দৃশ্য ধরা পড়ল, তাতে তো কখনও কখনও মনে হাতে পারে যে সত্যিই মহালয়ার সন্ধ্যা তো এটা? নাকি এটা অষ্টমীর দৃশ্য? আর প্যান্ডেল হপিংয়ের সেই দৃশ্য দেখে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে যাঁরা ‘উৎসব বয়কটের' ডাক দিয়েছিলেন, তাঁদের আক্রমণ শানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, ‘সাধারণ মানুষ তাঁদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছেন।’
দেবাংশু বলেন, ‘শ্রীভূমি থেকে কল্যাণী আইটিআই; মহালয়ার দিন থেকেই মণ্ডপে-মণ্ডপে জনজোয়ার। যাঁরা উৎসব বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন, উৎসবে ফিরছি না বলে পিওর বাম সুলভ স্লোগান তুলেছিলেন, সাধারণ মানুষ তাঁদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছেন। মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন গরিবের পেটে লাথি মেরে উৎসব বয়কট (করার বিষয়টি) কোনও সুস্থ মানসিকতার লক্ষণ নয়।’
কোনও চক্রান্তেই দুর্গাপুজো বয়কট নয়, কটাক্ষ দেবাংশুর
সেই রেশ ধরে দেবাংশু ব্যাখ্যা করে দেন যে কেন ‘উৎসবে ফিরুন’ বলে আহ্বান জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেবাংশু বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সেই গরিব মানুষদের জন্যেই বলেছিলেন উৎসবে আসুন.. বলেননি, বিচার ভুলে উৎসবে ফিরুন.. বাংলা আজ বুঝিয়ে দিয়েছে, আইনের কাছে, আদালতের কাছে বিচারের দাবি যেমন থাকবে, তেমনই থাকবে উৎসবের উদ্দীপনা। থাকবে, মাতৃ বন্দনাও। কোনও চক্রান্তেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ ইভেন্টকে বলিতে চড়তে দেওয়া যাবে না। জয় মা দুর্গা..।’
আরও পড়ুন: ‘আরজি করের ঘটনায় আমার হৃদয় জ্বলে ছারখার!’ জাগো বাংলায় লিখলেন মমতা, 'প্রচ্ছদও আমার আঁকা'
মহালয়ার সন্ধ্যায় শ্রীভূমিতে জনজোয়ার
আর দেবাংশু যে উৎসবের উদ্দীপনার উল্লেখ করেছেন, তা দেবীপক্ষের সূচনায় ধরা পড়েছে শ্রীভূমিতে। তিরুপতি বালাজি মন্দির দেখতে মহালয়ার সন্ধ্যায় মানুষের ঢল নামে। রীতিমতো দড়ি ফেলে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। মাইকে ঘোষণা করতে হয় যে হুড়োহুড়ি করবেন না। ঘড়ির কাঁটা যখন ১১ টা ছুঁয়ে ফেলেছে, তখন মণ্ডপের সামনে প্রচুর মানুষকে দেখা গিয়েছে।
তারইমধ্যে একজন বলেন, প্রতি বছর মহালয়ায় ঠাকুর দেখতে বের হই। মহালয়ায় একেবারে নতুন জামাকাপড় পরেই ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছি।' অপর একজন আবার বলেন, ‘মহালয়ার দিন পুজোর কেনাকাটি করতে বেরিয়েছিলাম। ফেরার পথে শ্রীভূমির ঠাকুর দেখে গেলাম। এরপর যা ভিড় হবে।’
লুমিনাস ক্লাবে জনস্রোত
অন্যদিকে, লুমিনাস ক্লাবে তো জনস্রোতের ঢেউ আরও বেশি ছিল। ব্যাঙ্ককের বিখ্যাত অরুণ ওয়াট মন্দির দেখতে মহালয়ার সন্ধ্যায় জনজোয়ার নামে। মণ্ডপের সামনের রাস্তায় স্রেফ কালো মাথার ভিড় দেখা যায়। সপ্তমী বা অষ্টমীতে যেমন মণ্ডপের সামনে ভিড় থাকে, সেরকমই দেখা যায় মহালয়ার সন্ধ্যায়। ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়।