তৃণমূল কংগ্রেসের যুব কমিটিতেও কি 'নেপোটিজম'? রাজ্যের শাসক দলের যুব সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ রাজ্য কমিটির তালিকা প্রকাশিত হওয়ার তেমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ যুব সংগঠনের পদাধিকারীদের তালিকায় আছে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী ও নেতা-নেত্রীদের সন্তানের নাম। অথচ বাদ পড়েছেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। যিনি তারপরই ফেসবুকে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেন।
তৃণমূলের যুব সংগঠনের নয়া কমিটিতে মোট ৪৮ জনকে রাখা হয়েছে। রাজ্যের শাসক দলের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদনের ভিত্তিতে অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে সভাপতি পদে বহাল রাখা হয়েছে। যিনি গত বছর বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দেন। চারজনকে তাঁর ডেপুটি করা হয়েছে - বিধায়ক তথা অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী, বাঘমুণ্ডির বিধায়ক সুশান্ত মাহাত, শুভঙ্কর সিং এবং বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহার ছেলে অর্পণ।
স্বর্ণকমলের ছেলের মতোই একাধিক তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের ছেলেমেয়েকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। তৃণমূলের নয়া কমিটিতে যে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আছেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র সায়নদেব, অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ছেলে সৌরভ, শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজার মেয়ে পূজা, তৃণমূল নেতা সঞ্জয় বক্সির ছেলে সৌম্যরাও। পূজা ও সৌরভ পুর নির্বাচনে জিতেছিলেন। সেইসঙ্গে তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির ছেলে সপ্তর্ষিকে সম্পাদক পদে বসানো হয়েছে। যে পদে আছেন কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা কাশীপুর-বেলগাছিয়ার তৃণমূল বিধায়ক অতীন ঘোষের মেয়ে প্রিয়দর্শনী এবং প্রয়াত সাধন পাণ্ডের মেয়ে শ্রেয়াও।
তবে যাবতীয় বিতর্ক তৈরি হয়েছে দেবাংশুর 'ছাঁটাই' ঘিরে। দু'বছর সাধারণ সম্পাদক থাকলেও এবার যুব তৃণমূলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে জায়গা হয়নি দেবাংশুর। তারপরই ফেসবুকে ইঙ্গিতপূর্ণ ইমোজি পোস্ট করেন। যিনি তৃণমূলের নয়া প্রজন্মের যে অন্যতম জনপ্রিয় মুখ, তা নিয়ে কোনও দ্বিধা নেই রাজনৈতিক মহলের। দেবাংশুর পোস্টে শুধুমাত্র 'হাসি' (কষ্ট চেপে হাসির মতো অনেকটা) মুখের ছবি ছিল। তারপর যুব তৃণমূলের 'চাকরি' ছেড়ে দিয়েছেন বলেও পোস্ট করেন। কিছুক্ষণ পর অবশ্য সেই পোস্ট মুছে দেন। যা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'কংগ্রেসের এক নধর খাসি' কুকথায় পঞ্চমুখ তৃণমূলের দেবাংশু, ফেসবুকে নিশানায় কে?
বিষয়টি নিয়ে দেবাংশু সরাসরি কিছু বলেননি। তিনি জানিয়েছেন, আজ বেলা ১২ টায় ফেসবুক লাইভ করবেন। তারইমধ্যে কোনও প্রসঙ্গ উল্লেখ না করেই ফেসবুকে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ লেখেন, 'অকারণ বাড়তি জল্পনা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।' তাতে অবশ্য জল্পনা থামেনি। বরং দেবাংশুর মতো 'জানপ্রাণ লড়িয়ে দেওয়া' নেতাকে কেন বাদ দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে গুঞ্জন চলছে।