মৃত বাবার নামে চার বছর ধরে রেশন তুলেছেন ডিলার। এমনই অভিযোগে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন ছেলে। মৃতের রেশন কার্ড ৪ বছর ধরে ‘অ্যাক্টিভ’ হওয়ায়, রেশন তোলার অভিযোগ উঠেছে ডিলারের বিরুদ্ধে। রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন উপভোক্তা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে চন্দ্রকোণার বসনছোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ডালিমাবাড়ি গ্রামে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ কুশারীর অভিযোগ, তাঁর বাবা প্রণত কুশারী চার বছর আগে মারা গিয়েছেন। অথচ তার বাবার রেশন কার্ড এখনও চালু রয়েছে। সেক্ষেত্রে তাঁর মৃত বাবার নামে আসা খাদ্যদ্রব্য নিশ্চয়ই রেশন ডিলারের কাছে আসছে বা অন্য কোথাও যাচ্ছে।
তিনি জানিয়েছেন, যেহেতু তাঁর বাবা এলাকার একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন, সেই কারণে তাঁর মৃত্যুর খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রসেনজিতের দাবি, সেই সময় গ্রামের রেশন ডিলার কাজলকুমার রায় তাঁকে জানিয়েছিলেন, প্রণতবাবুর মত্যু হওয়ার কারণে তিনি আর বাবার কার্ডে রেশন পাবেন না। তাঁর আরও দাবি, তখন থেকে তিনি পরিবারের বাকি ৩ সদস্যের নামে রেশন তুলেছেন। অথচ তাঁর বাবার রেশন কার্ডটি এখনও ‘অ্যাক্টিভ’ রয়েছে বলে অভিযোগ প্রসেনজিতের। তাঁর বাবার মৃত্যুর বিষয় জানার সত্ত্বেও কীভাবে তাঁর রেশন কার্ড চালু থাকে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রসেনজিৎ।
তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যজুড়ে আধার-রেশন কার্ড সংযুক্তিকরণের যে কাজ শুরু হয়েছে। সেটা করতে গিয়েই তিনি জানতে পারেন, তাঁর মৃত বাবার কার্ড এখনও চালু রয়েছে। সে কারণে রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে গাফিলতি ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ঘটনার তদন্তের দাবিতে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন প্রসেনজিৎ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই গ্রামের একাধিক পরিবারের সঙ্গে একই ঘটনা ঘটেছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে কেউ অভিযোগ দায়ের না করলেও ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন তাঁরা।
অভিযুক্ত রেশন ডিলার কাজলকুমার রায়ের পাল্টা যুক্তি, 'ওই উপভোক্তার তিনটি রেশন কার্ড দেখেছিলাম, তাই তিনটি রেশন কার্ডের মতো সামগ্রী দিয়েছি। ওনার বাবার মৃত্যু হলে, তাঁর মৃত্যু শংসাপত্রের বিষয় উনি আমাকে জানাননি। তাছাড়া এখন ডিজিটাল মাধ্যমে রেশন সামগ্রী বিতরণ হয়। সেক্ষেত্রে ডিলারদের বিশেষ কোনও ভূমিকা থাকে না। বাকি আর কিছু বলতে পারব না।' এ প্রসঙ্গে ব্লকের বিডিও অমিত ঘোষ বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।’