তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পে হাত দিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। কিন্তু দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ে তোলার কাজ খুব একটা এগোয়নি বলে অভিযোগ। যদিও এই প্রকল্প মনে–প্রাণে গড়ে তুলতে চান মুখ্যমন্ত্রী। কারণ এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দুটি বিষয় ঘটবে। এক, সরাসরি এলাকার উন্নয়ন হবে। দুই, বাংলার ছেলে–মেয়েদের জন্য বিরাট কর্মসংস্থানের দরজা খুলে যাবে। এবার নতুন করে টেন্ডার ডাকার পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য সরকার। তাহলে কি বাদ পড়বেন আদানি? এই প্রশ্ন এখন উঠতে শুরু করেছে।
এদিকে তাজপুরে সমুদ্র বন্দর গড়ে তোলার বিষয়ে যখন আলোচনা চলছে তখন নবান্নে হাতজোড় করে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানিকে। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল সর্বত্র। কিন্তু ডিপ সি পোর্ট গড়ে তুলতে এসে সেই আদানি গোষ্ঠী ডিপ ডাউট রেখে গেল। তাই নতুন করে গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে আবার সে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, নতুন করে টেন্ডার ডাকার জন্য আইনি পরামর্শ নিতে হবে। সুতরাং আদানি গোষ্ঠী বাদের খাতায় পড়তে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘মৃত্যুর পর আল্লার কাছে প্রত্যাবর্তন’, তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে পড়ল হুমকি পোস্টার
অন্যদিকে বীরভূমের দেউচা–পাঁচামি কয়লা খনি নিয়ে সাফল্য আসা শুধু সময়ের অপেক্ষা। যেটুকু সমস্যা আছে তা অচিরেই মিটে যাবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। কিন্তু তার সঙ্গে একটা গভীর সমুদ্র বন্দর রাজ্য সরকার করতে পারলে সেটা হবে বিশেষ মাত্রা যোগ করবে বাংলায়। তাই প্রশাসনিক বৈঠকে সংশ্লিষ্ট অফিসারদের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তাজপুরের সমুদ্র বন্দরটা এবার দেখতে হবে। যদি ওটা না হয় তা হলে আমাদের গ্লোবাল টেন্ডার করতে হবে। তার জন্য আইনি পরামর্শ নাও।’ তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর করতে শিল্পপতি গৌতম আদানির সঙ্গে নবান্নে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তার বাস্তবায়ন নিয়ে আছে বিস্তর ধোঁয়াশা।
এখন আদানি গোষ্ঠী নানা সমস্যায় জর্জরিত। মার্কিন মুলুকে তাদের সংস্থার বিরুদ্ধে দেওয়ানি–ফৌজদারি একসঙ্গে মামলা চলবে। ভারতে ইন্ডিয়া জোট আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সোচ্চার। কংগ্রেস সাংসদ তথা রাহুল গান্ধী আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন। সুতরাং সব মিলিয়ে চাপে আছে আদানি গোষ্ঠী। তবে এই আদানি গোষ্ঠী রাজ্য সরকারকে বন্দরে কাজ করার ইচ্ছাপত্র বা লেটার অফ ইনটেন্ট জমা দেয়। ২৫ হাজার কোটি বিনিয়োগের আগ্রহ দেখায় আদানি গোষ্ঠী। এটা কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজ্য সরকার জানালে কেন্দ্র চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল, ওই সংস্থার কাজে কোনও ত্রুটি ধরা পড়লে সেটার দায় রাজ্য সরকারের উপরে বর্তাবে। তখনই বিতর্কে জড়ায় আদানি গোষ্ঠী। তাই বিশ বাঁও জলে ওই প্রকল্প।