ইচ্ছে ছিল সুন্দরবনে ঘোরার। সেজন্য সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে দিল্লি থেকে রওনা দিয়েছিলেন যুবক। কিন্তু, সুন্দরবনে যাওয়ার আগেই ঘটল বিপত্তি। লঞ্চের টিকিট কাটার নাম করে নিয়ে গিয়ে দিল্লিবাসী ওই যুবককে অপহরণ করে দুষ্কৃতীরা। তারপর স্ত্রীর কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ৪ লক্ষ টাকা দাবি করে তারা। আর টাকা না দিলে মহিলার স্বামীকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় অপহরণকারীরা। তবে মহিলা বিচলিত না হয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শেষ পর্যন্ত পুলিশ ওই যুবককে উদ্ধার করে। একইসঙ্গে দুইজন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন: ফাঁকা রাস্তায় স্কুল ছাত্রীকে বাইকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা, যুবককে গণপিটুনি
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লির বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন স্ত্রী রোশনারা এবং সন্তানকে নিয়ে বাংলায় এক বন্ধুর বাড়িতে উঠবেন বলে ঠিক হয়েছিল। ওই বন্ধুর নাম আব্বাস। জানা গিয়েছে, আব্বাস কিছুদিন দিল্লিতে ছিলেন। সেই সূত্রে, দম্পতির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তবে সেই পরিচয় খুব বেশি দিনের ছিল না। দিল্লিতে থাকার সময় আব্বাস তাদের সুন্দরবনে আসার কথা জানিয়েছিল। সেই সূত্রেই শনিবার সুন্দরবনের যাওয়ার জন্য দিল্লি থেকে রওনা হয়েছিলেন দম্পতি। রবিবার সন্ধ্যায় তাঁরা হাওড়া স্টেশনে পৌঁছন। সেখানে আব্বাসের সঙ্গে কথা বলেন সাদ্দাম। এরপর তাঁরা শিয়ালদা স্টেশনে যান। সেখানে আব্বাসের পরিচিত আজগর মোল্লা নামে অন্য এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় সাদ্দামদের। তাঁরা অজগরের সঙ্গে ক্যানিংয়ে চলে যান। সেখানে একটি হোটেলে ওঠেন। এরপর আজগার জানান, তিনি সুন্দরবনে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন।
পরের দিন সোমবার সকালে বাসন্তী সোনাখালিতে দম্পতিকে নিয়ে যায় আজগর। সেখানে আব্বাসও চলে আসে। তখন তারা জানায় লঞ্চের টিকিট কাটতে হবে। এরপর সাদ্দাম তার স্ত্রী এবং সন্তানকে একটি চায়ের দোকানে রেখে আব্বাস এবং আজগরের সঙ্গে চলে যান। কিন্তু, দীর্ঘক্ষণ স্বামী না ফেরায় চিন্তিত হয়ে পড়েন রোশনারা। এরপরেই রোশনারার কাছে ফোন আসে। তাতে দাবি করা হয়, তাঁর স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। টাকা না দিলে তারা তাঁর স্বামীকে প্রাণে মেরে ফেলবে। অপহরণকারীরা তাকে ইউপিআইয়ের মাধ্যমে টাকা পেমেন্ট করতে বলে। তবে তাতে ভয় না পেয়ে রোশনারা সন্তানকে কোলে নিয়ে সোজা থানায় চলে যান।
এরপর পুলিশকে সমস্ত কিছু খুলে বলেন। সেই ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এরপর ওই ফোন নম্বরের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে তদন্তকারীরা অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। একইসঙ্গে দিল্লিবাসী যুবককে উদ্ধার করে। দুজনকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে তাদের পুলিশে হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশের অনুমান, এই চক্রে আরও অনেকে জড়িত। তাদের খোঁজ করার চেষ্টা করছে পুলিশ।