গরম এই বছর বেশ ভালই পড়েছে। তীব্র দাবদাহে মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থা। কবে বর্ষা আসবে? সেই প্রহর গুণছে বাংলার মানুষজন। এই আবহে বাংলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করল। এখন যা পরিস্থিতি তাতে ১১০০ ছাড়াল ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। জুন মাসের অর্ধেক পার হয়ে গেলেও তেমন বৃষ্টি এখনও হয়নি বাংলার মাটিতে। কিন্তু তা সত্ত্বেও দক্ষিণবঙ্গে ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে এই মশাবাহিত রোগ। ডেঙ্গির বাহক মশা এডিস ইজিপ্টাই শুষ্ক শীতল আবহাওয়ায় জন্মায় না। এখন রাজ্যে ব্যাপক গরম পড়েছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মশার উপদ্রব। তাই রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গি হচ্ছেই।
চার বছর আগেও এমন প্রচণ্ড দাবদাহে ডেঙ্গির কথা কেউ ভাবতে পারতেন না। কিন্তু এখন তা ১১০০ সংখ্যা ছড়িয়ে গিয়েছে। সবসময়ই দেখা যেত ডেঙ্গি আক্রান্তের তালিকায় শীর্ষে থাকত উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। কিন্তু এখন তা দেখা যাচ্ছে না। বরং শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছে মালদা। তারপর ধারাবাহিকভাবে দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যের ১৬টি জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। তার মধ্যে মালদা শীর্ষে। ডেঙ্গির এই বাড়বাড়ন্তে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন সাধারণ মানুষজন।
আরও পড়ুন: ‘বিধানসভায় ওরা জিরো হয়ে যাবে’, বরিবাসরীয় দুপুরে বড় ভবিষ্যদ্বাণী করলেন ফিরহাদ
এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অভয় দিচ্ছেন, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। রোগটা বিক্ষিপ্তভাবে এখন প্রায় সারা বছরই হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১১২১, সেটা ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত সময় নিয়ে। তার মধ্যে শুধুমাত্র মালদা ছাড়া বাকি ১৫ জেলাই দক্ষিণবঙ্গের। ডেঙ্গিতে সংক্রামিতের সংখ্যা ১০০ ছাড়ানো চার জেলার মধ্যে মালদা ছাড়া বাকি সব জেলাই দক্ষিণবঙ্গের। ডেঙ্গির এই পরিসংখ্যান মিলেছে বলেই নতুন করে ভাবনা শুরু হয়েছে। মশার উপদ্রব সব জেলাতেই আছে। সেখানে কাউকে কামড়ালে ডেঙ্গি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২৩ সালে সারা বছর লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হন ডেঙ্গি রোগে।
অন্যদিকে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৭৪। সেটাই এই কয়েক মাসে ১১২১ সংখ্যায পৌঁছেছে। শীর্ষস্থানে পৌঁছেছে মালদা (১৫৩)। আর উত্তর ২৪ পরগনা (১৪২), মুর্শিদাবাদ (১৩৫) এবং হুগলি (১২৬)। কলকাতা রয়েছে অবশ্য পঞ্চম স্থানে (৯৬)। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়ায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৬৮ ও ৩৬। মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসতে শুরু করেছে। আগামী দিনে তা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু সংক্রমণটা বিশেষত মাথাচাড়া দেয় বর্ষায়। সেখানে বর্ষা এখনও আসেনি। এই পরিস্থিতিতে যাতে রাশ টানা যায় তার জন্য স্বাস্থ্যভবনের বৈঠকের আলোচনায় জোর দেওয়া হয়েছে।