পর্যটকদের কাছে অতি পরিচিত ‘পিকনিক স্পট’ দক্ষিণ ২৪ পরগনা ডায়মন্ডহারবার পুরসভার অন্তর্গত কেল্লার মাঠ। এই জায়গাটির একটা ইতিহাস আছে। পিকনিক ডেস্টিনেশনের লিস্টে থাকে এটি। হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত ডায়মন্ডহারবারের ঐতিহ্যপূর্ণ কেল্লা ৷ কিন্তু সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পর্তুগিজদের তৈরি এই কেল্লা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছিল। এবার এটাকে ‘পিকনিক স্পটের’ পাশাপাশি পর্যটনকেন্দ্র হোক চান এলাকার সাংসদ তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাই তাঁর উদ্যোগে ডায়মন্ডহারবার কেল্লার মাঠকে ঢেলে সাজানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। কলকাতা থেকে কাছে কয়েক ঘণ্টার জার্নি করে অনেকেই নানা জায়গা খুঁজে থাকেন। এবার হুগলির নদীর তীরবর্তী এই কেল্লার মাঠ পর্যটকদের কাছে নতুন করে তুলে ধরা হচ্ছে।
এখানে প্রথম পর্যায়ে ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকায় ২৫০ মিটার বাঁধ ব্লক পিচিং করা হবে। তার পর এই কেল্লার মাঠটিকে মাটি ফেলে কিছুটা উঁচু করা হবে। পর্যটকদের স্বার্থে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলোর ব্যবস্থা এখানে থাকবে। আধুনিক মানের শৌচাগার থেকে শুরু করে বসার জায়গা করা হচ্ছে। যেখানে দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকরা এলে নদীর পাড়ে বসে হুগলি নদীর প্রকৃতির সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে পারেন। ডায়মন্ডহারবার পুরসভার তত্ত্বাবধানে এভাবে সাজানো হবে। প্রাচীন মানুষজন সূত্রে পাওয়া খবর, পর্তুগিজ জলদস্যুরা নদীপথে বাণিজ্য করতে আসা জাহাজে লুঠপাট করত। তার জন্য এই কেল্লা ব্যবহার করত তারা। আগে হুগলি নদী লাগোয়া হাজিপুরের পূর্ব তীরের খাঁড়িতে ধবধবে সাদা নুন দেখা যেত। মাঝ নদী থেকে যাকে উজ্জ্বল হীরক খণ্ড মনে হতো। পর্তুগীজ বণিকরা হাজিপুরকে ‘ডায়মন্ড ক্রীক’ নাম দেন।
আরও পড়ুন: রাত পোহালেই বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ, মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ে জোর প্রচার
এরপর এই জায়গার নাম হয় ডায়মন্ডহারবার। ইংরেজরাও এই জলপথ ধরে যাতায়াত করত। ইংরেজরা ডায়মন্ডহারবারেই একটি দুর্গ নির্মাণ করেছিল। তখন তারা নাম দেয়, ‘ডায়মন্ডহারবার চিংড়িখালি কেল্লা’। একাধিক কামান বসানো হয়েছিল যাতে জলদস্যুরা আসতে না পারে। পরে হুগলি নদীর তীরে পোতাশ্রয় বা বন্দর গড়ে তোলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এখানে গড়ে ওঠা দুর্গে তিনটি কামান ছিল। কালের গতিতে তলিয়ে গিয়েছে কিছু অংশ। তবে বাকিটা রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ডায়মন্ডহারবারের বিধায়ক পান্নালাল হালদার একটি প্রস্তাব পাঠান। ওই প্রস্তাবের ভিত্তিতে প্রথম পর্যায়ে কাজ শুরু হয়েছে।
এই কাজের উদ্বোধনে উপস্থিত হন ডায়মন্ডহারবার পুরসভার চেয়ারম্যান প্রণবকুমার দাস, ভাইস চেয়ারম্যান রাজশ্রী দাস এবং একাধিক কাউন্সিলররা। ডায়মন্ডহারবার বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেসের আহ্বায়ক শামিম আহমেদ এবং পুরসভার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন তরফদারও ছিলেন। বিধায়ক পান্নালাল হালদার বলেন, ‘শহরকে ঢেলে সাজানো এবং কেল্লার মাঠকে আরও মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে যা যা পরিকল্পনা নিয়েছেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ধাপে ধাপে সেই কাজগুলি শুরু হয়েছে।’