এবার বিতর্কের মুখে পড়ল ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজ। কারণ এখানে এক ছাত্র ভর্তি হয়েছে ভুয়ো শংসাপত্র জমা দিয়ে বলে অভিযোগ। ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্রের দিয়ে ভর্তি হয়েছেন ওই ছাত্র বলে অভিযোগে তোলপাড় ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজ। এই ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতি ওই পড়ুয়ার ভর্তি বাতিলের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালের কাছে ইতিমধ্যেই ডেপুটেশন জমা দেওয়া হয়েছে। ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল জানান, স্বাস্থ্যভবন এবং ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নির্দেশ মেনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি সেবাশ্রয় প্রকল্প নিয়ে এসে গোটা দেশে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। আর সেখানেই এমন অভিযোগ ওঠায় বিতর্ক তো হবেই। ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, ওই পড়ুয়ার নাম পরমব্রত রায়। ২০২৩ সালে ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। নিটে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতেই এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হন পরমব্রত। পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতির অভিযোগ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর সাব–ডিভিশনাল অফিস থেকে ২০২৩ সালের ৫ জুন পরমব্রত রায় তফসিলি জাতির শংসাপত্র সংগ্রহ করে তা জমা দেয়। কিন্তু দু’মাসের মধ্যেই আবার তিনি ওই অফিস থেকে তফসিলি উপজাতির শংসাপত্র সংগ্রহ করেন। আর সেই শংসাপত্রের ভিত্তিতেই ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন পড়ুয়া পরমব্রত।
আরও পড়ুন: গড়িয়াহাটের বেসরকারি বিমা সংস্থার কর্মী পুরীতে অপহৃত হন, উদ্ধার হলেন হাবড়ায়
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে এখন বিস্তর চর্চা শুরু হয়েছে। কেমন করে এই কাজ করা সম্ভব হল? উঠছে প্রশ্ন। ২০২৪ সালের ৯ জুলাই ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস ওয়েলফেয়ার বিভাগের ওয়েবসাইটে দেখা গিয়েছে, পরমব্রত রায়ের তফসিলি উপজাতির শংসাপত্র বাতিল করা হয়েছে। সেখানে ওই পড়ুয়া বাতিল শংসাপত্র দিয়েই দিব্যি পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতির। তাদের দাবি, জাতিগত শংসাপত্র বাতিল হয়েছে সেটা তো পড়ুয়া জানতেন। তাহলে ওই পড়ুয়ার ভর্তি বাতিল হবে না কেন? অবিলম্বে তা বাতিল করতে হবে।
অন্যদিকে এই নিয়ে যখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে তখন চাপ বাড়তে শুরু করে এই ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজের উপর। আর তার জেরে পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতির প্রশ্ন, এভাবে জাতিগত শংসাপত্রের অপব্যবহার হলে প্রকৃত তফসিলি জনজাতির ছাত্রছাত্রীরা কোথায় যাবে? ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক উৎপল দাঁ বলেন, ‘অভিযোগ আসার পরই বিষয়টি স্বাস্থ্যভবন এবং ওয়েলফেয়ার সোসাইটিকে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে যা নির্দেশ আসবে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপের কথা জানানো হয়নি।’