পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে দিঘায় নির্মিত হচ্ছে বিশাল মন্দির। এটা করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে গত মে মাস থেকে। রাজস্থানের বংশী পাহাড় থেকে নিয়ে আসা হয়েছে বিখ্যাত স্যান্ডস্টোন। কারিগররা সেই পাথর কাটছেন। আর জোরকদমে চলছে কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ। প্রযুক্তিবিদ, কারিগর এবং শ্রমিক মিলিয়ে প্রায় ২০০ জন কাজ করছেন। প্রকল্পটি নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে হিডকো।
তাহলে কবে শেষ হবে নির্মাণ কাজ? এই প্রকল্প এবং তা শেষের বিষয়ে হিডকোর চিফ ইঞ্জিনিয়ার সুমন নিয়োগী বলেন, ‘২০২৩ সালের মধ্যেই মন্দির তৈরি হয়ে যাবে। দেশের কোথাও এই ধরনের কাজ হয়নি। পুরীর মন্দিরের মতো ৬৫ মিটার দৈর্ঘ্য এবং বিখ্যাত স্থাপত্যের সব বৈশিষ্ট্যই অবিকল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে এখানে। একইসঙ্গে তোরণ, গর্ভগৃহ, ভোগ রান্নার জায়গা তৈরি করা হবে। তবে আলোকসজ্জায় বৈচিত্র্য থাকবে।
ঠিক কোথায় হচ্ছে মন্দিরটি? নিউ দিঘা যেতে রাস্তার পাশে এবং রেল স্টেশনের কাছেই ২০ একর জমিতে গড়ে উঠছে মন্দিরটি। ফলে সমুদ্র সৈকত এবং জগন্নাথ মন্দির একসঙ্গে পাবেন পর্যটকরা। সেক্ষেত্রে পুরী না গিয়েও পুরীর সবরকম অনুভূতি এখানে মিলবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই বিষয়ে দিঘা–শংকরপুর উন্নয়ন সংস্থার এক্সিকিউটিভ অফিসার মানসকুমার মণ্ডল জানান, জমির মালিকানা সংস্থার হাতেই ছিল। মন্দিরটি তৈরি হয়ে গেলে দেশের পর্যটন মানচিত্রে নতুন পালক যোগ হবে। গোটা নির্মাণে খরচ হবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। পুরীর থেকে দিঘার এই মন্দিরের অবস্থান সমুদ্রের আরও কাছাকাছি। তাই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়লেও যাতে মন্দিরের কোনও ক্ষতি না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। তবে পুরীর মন্দিরের প্রথা মেনেই পুজোর ব্যবস্থা এখানে থাকবে।
আর কী জানা যাচ্ছে? ইতিমধ্যেই দিঘা থেকে কাঁথি পর্যন্ত ২৯.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ চালু হয়ে গিয়েছে। এখানের ‘নায়ে কালী’ মন্দিরটি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে চলেছে। চম্পা নদীর সেতুর কাছে ৩০০ বছরের পুরনো মন্দিরটি রয়েছে। দিঘা–শংকরপুর উন্নয়ন সংস্থা এই মন্দির চত্বরের উন্নয়নে ১৫ কোটি টাকা খরচ করছে। এখানে আলো ও ধ্বনির মাধ্যমে দিঘার ইতিহাস তুলে ধরার ব্যবস্থা হচ্ছে। আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই নতুনরূপে দেখা যাবে এই মন্দির।