নিম্নচাপের জেরে ভারী বৃষ্টিতে তোলপাড় বাংলা। একদিকে যখন এই বর্ষার জেরে মানুষ জলবন্দি তখন অপরদিকে সৈকতনগরীতে নামল ভরা বর্ষায় মানুষের ঢল। এই বর্ষায় এখন দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বানভাসী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সমুদ্র উত্তাল হয়ে সেখানে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। আর সেসব উপেক্ষা করেই দিঘায় নামল পর্যটকদের ঢল। বারবার সতর্কতা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। তারপরও পর্যটকদের ভিড় কমছে না দিঘায়। বরং বাড়ছে। আর সমুদ্রে নেমে জলকেলিতে ব্যস্ত পর্যটকরা। যা নিয়ে চিন্তিত প্রশাসনের অফিসাররা।
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কোনও লাভ হয়নি তাতে। বরং সমুদ্রের রুদ্র রূপ দেখতেই দিঘায় ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা। ভরা জোয়ারের সময়টুকু বাদ দিলে পুরোদস্তুর সমুদ্রস্নানের মজাও নিচ্ছেন তাঁরা। বৃষ্টি হয়েই চলেছে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে। দিঘা–সহ উপকূলবর্তী এলাকায় বৃষ্টির দাপট মারাত্মক আকার নিয়েছে। ঝোড়ো হাওয়ার দাপটের পাশাপাশি নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। আর সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস এবং ভয়ঙ্কর আওয়াজ দেখতেই দিঘায় ভিড় জমিয়েছেন বিপুল পরিমাণ পর্যটকরা। কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করে পুরোদমে চলছে সমুদ্রস্নান।
আরও পড়ুন: ‘আমাদের মান পড়ে যাচ্ছে’, অফিসারদের সময়–জ্ঞান নিয়ে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি
অন্যদিকে কয়েক সপ্তাহ আগে দিঘা–সহ পার্শ্ববর্তী সমুদ্রসৈকতে একের পর এক দুর্ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। বেশ কয়েকজন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। যা নিয়ে উদ্বেগে আছে প্রশাসন। ১৫ দিনের মধ্যে ৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে দিঘার সমুদ্র সৈকতে। এই উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে পর্যটকরা যাতে আর সমুদ্রে না নামেন তার জন্য বারবার মাইকিং করা হচ্ছে। তাঁদের সতর্ক করা হলেও বহু পর্যটক তাতে কর্ণপাত করছেন না বলে অভিযোগ। সমুদ্র সৈকতে কড়া নজর রাখছে প্রশাসনের অফিসাররা। তবে কোনও দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
এছাড়া পর্যটকদের গভীর সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কেউ যাতে বেশি দূরে না যান সেটায় নজরদারি চালাতে নামানো হয়েছে স্পিডবোট। তার উপর সমুদ্রতটে কড়া নজরদারি রেখেছে পুলিশ এবং নুলিয়ারা। সজাগ রয়েছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। মদ্যপান করে সমুদ্রে যাতে কেউ না নামেন সেটা নিয়ে একাধিকবার কড়া সতর্কতা জারি করেছে পুলিশ–প্রশাসন। কাউকে মদ্যপ অবস্থায় জলে নামতে দেখলেই আটক করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। লাঠি হাতে সমুদ্রসৈকতে টহল দিতে দেখা গেল দিঘা থানার ওসিকে। সুতরাং নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা ভালই রয়েছে।