হড়পা বানে বিপর্যস্ত সিকিম। জায়গায় জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। ব্যাহত হয়েছে যান চালাচল। এই জাতীয় সড়কের ক্ষত সারাই করতে অন্তত ১০ দিন লাগবে। এমনটাই জানালেন সিকিমের জেলাশাসক বালাসুব্রমনিয়ম টি।
বাংলা-সিকিমের লাইফলাইন বলে পরিচিত এই ১০ জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলেন জেলাশাসক পরে। তিনি জানা, ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, অন্তত ১০ দিন সময় লাগবে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক করতে।
এই বিপর্যয়ে কালিম্পং জেলার অন্তত ৩০০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন। বিডিওরা জেলার বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে এলে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ জানা যাবে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে সিকিমে নতুন করে দুর্যোগ দেখা দিলে ভাসতে পারে সমতলের এলাকা। তিস্তার পার এলাকায় মাইকিং করে বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে। বাসিন্দারের নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ফ্লাড শেল্টারগুলিও খুলে দেওয়া হয়েছে।
মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও ভয়াল বন্যায় এখনও পর্যন্ত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ ৭৮ জন। নিখোঁজ হওয়া ২৩ জন জওয়ানের এখন খোঁজ মেলেনি। তল্লাশ চালানো হচ্ছে। তিস্তায় জলের তোড়ে নামছে ধস। তিস্তার জল যত নীচের দিকে নামছে উদ্ধার হচ্ছে মৃতদেহ। গাজলডোবা, ময়নাগুড়ি, কোটওয়ালি, কুচলিবাড়ি, হলদিবাড়ি ও মিলনপল্লি এলাকায় একাধিক দেহ উদ্ধার হয়েছে। আবার বাংলাদেশের গালিবান্ধায় মৃতদেহ ভেসে ওঠার খবর পাওয়া গিয়েছে।
(পড়তে পারেন। বন্যা বিধ্বস্ত সিকিমে এখনও পর্যন্ত ৩৮ জন মৃত, নিখোঁজ বহু, দেহ ভেসে উঠছে)
আশঙ্কা করা হচ্ছে লাচেন ও লাচুংয়ে অন্তত ৩০০০ হাজার পর্যটক আটকে রয়েছে। পর্যটকদের অবস্থা সম্পর্কে তাঁর পরিবারের সদস্যদের তথ্য দিতে হেল্প লাইন চালু করেছে সিকিম সরকার।
অন্য দিকে, আজ শুক্রবার থেকে নাথুলা. ছাঙ্গুলেক অনির্দিকালের জন্য বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু পযর্টক নয় স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য এই নির্দেশিকার জারি করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে উত্তর সিকিমের একটি সেনা ছাউনিতে দেড় হাজার পর্যটনক আটকে রয়েছেন। এই পর্যটকরা লাচুং ও লাচেন বেড়াতে গিয়েছিলেন। পরিস্থিতি একটি স্বাভাবিক হলেই তাঁদের ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে, বলে সংবাদমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়েছে বাহিনী।
প্রসঙ্ত, যোগাযোগ ব্যবস্থা বেহাল হয়ে যাওয়া চপারে করে পর্যটকদের ফেরানো যায় কিনা তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেছে সিকিম সরকার। তবে বৃষ্টি চলতে থাকায় তা কতটা সম্ভব তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।