বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে মনোমালিন্য কি মিটে গেল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর? রাজ্য–রাজনীতিতে এই প্রশ্নই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। কারণ দু’দিন আগেই একে–অপরের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ করেছিলেন। তবে দু’জনেই তা করেছিলেন নাম না করেই। এই পরিস্থিতিতে কড়া দাওয়াই এসেছিল আরএসএস এবং বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে। তখন সুর নরম করে শুভেন্দু অধিকারী সংবাদমাধ্যমকে দায়ী করেছিলেন। আজ, শুক্রবার সকালে পাল্টা ঐক্যের বার্তা দিয়ে সংবাদমাধ্যম দায়ী বলে মন্তব্য করলেন দিলীপ ঘোষও। আসলে অমিত শাহের নির্দেশ এসেছে দু’জনের কাছেই। তাই এখন আবার একমঞ্চে পাশাপাশি বসতে দেখা গেল তাঁদের।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? শেষমেশ যুযুধান দু’পক্ষের মধ্যে মিল হয়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ গতকাল বৃহস্পতিবার হলদিয়ায় শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, দিলীপ ঘোষ আমার নেতা। নন্দীগ্রামের জয়ে আমাকে সাহায্য করেছিলেন। আর প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে আজ শুক্রবার দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘কোনও তরজাই নেই। একই পার্টি, আর একই আদর্শ। আপনারা (মিডিয়া) আপনাদের প্রয়োজন মতো এই তরজা বাড়ান কমান। আমরা একই পার্টি। একই আদর্শ। নিজের কথা যে যার নিজের মতো বলেন। এটাই গণতন্ত্র। যা বিজেপি দলে আছে। বোধোদয় না। এটাই বাস্তব।’ এরপরই আজ দেখা গেল হুগলিতে দলীয় এক কর্মসূচিতে তাঁরা পাশাপাশি বসলেন।
ঠিক কী দেখা গেল? এদিন দলীয় মঞ্চে পাশাপাশি বসতে দেখা গেল দুই যুযুধান নেতাকে। মাঝে শুভেন্দু। একপাশে দিলীপ। অন্য পাশে সুকান্ত মজুমদার। আজ, শুক্রবার হুগলির ব্যান্ডেলে দলের পদাধিকারীদের সভা ডেকেছে বিজেপি। সেখানে দিলীপ এবং শুভেন্দু দু’জনেই যোগ দিয়েছেন। তাঁদের পাশেই বসে রয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তিনজনকে পাশাপাশি চেয়ারেও বসতে দেখা গিয়েছে। আসলে এই ছবি দেখিয়ে দলের নীচুতলার কর্মীদের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দিতে চাওয়া হয়েছে। আজ রাতে কলকাতায় আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনিই নির্দেশ দিয়েছিলেন, অবিলম্বে এই বিরোধ মিটিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এবার সেটাই করা হল বলে সূত্রের খবর।
আর কী জানা যাচ্ছে? সূত্রের খবর, অমিত শাহের পক্ষ থেকে একদিকে শুভেন্দুকে সংযত করা হয়েছে। অন্যদিকে সংযত হতে বলা হয়েছে দিলীপকেও। তারপরই এক মঞ্চে এলেন যুযুধান প্রতিপক্ষ। শুভেন্দু অধিকারীকে সরাসরি আরএসএস কড়া বার্তা দিয়েছিল। এমনকী নয়াদিল্লিকেও ঘটনার কথা জানিয়েছিল কেশব ভবন। তারপরই নন্দীগ্রামের বিধায়কের কাছে আসে শাহের নির্দেশ। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই নেতাকে নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানেই তাঁদের মধ্যেকার বিরোধ মিটিয়ে কড়া বার্তা দেন বিএল সন্তোষ। আর সতর্ক করে দেন, এমন কাজ যেন ভবিষ্যতে না ঘটে।